আজ মহাষষ্ঠী। দেবীর বোধন হয়ে গিয়েছে সাতসকালেই। সুতরাং বাংলায় এখন ভরপুর উৎসবের আমেজ। কিন্তু বিপরীত একটা ছবিও দেখা যাচ্ছে। রাজপথে আমরণ অনশন করছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। আজ, বুধবার তাঁরা সিজিও কমপ্লেক্স অভিযানের ডাক দিয়েছেন। কারণ সিবিআই যে চার্জশিট শিয়ালদা আদালতে পেশ করেছে তা তাঁরা মানতে রাজি নন। ইতিমধ্যেই গণইস্তফার বিষয়টি সামনে আসে। যদিও তা রাজ্য সরকার পর্যন্ত পৌঁছয়নি। এই আবহে এবার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। আর তাতেই সরগরম হয়ে উঠল রাজ্য–রাজনীতি। যা নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
রাজভবন থেকে একটি ভিডিয়ো বার্তা দিয়েছেন রাজ্যপাল। সেখানে জুনিয়র ডাক্তার থেকে শুরু করে সিনিয়র চিকিৎসকদের গণইস্তফার বিষয়টি উঠে এসেছে। আর তার সঙ্গে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস আক্রমণ করেছেন রাজ্য সরকারকে। ভিডিয়ো বার্তায় রাজ্যপাল বলেন, ‘সরকার ব্যর্থ মানুষকে পরিষেবা দিতে। তাই এখন মানুষ নোটিশ দিয়েছে সরকারকে। সেটা কি কেউ দেখতে পাচ্ছেন না? গোটা বিশ্ব দেখতে পাচ্ছে এই নোটিশ। গণইস্তফা দিয়েছেন ৫০ জন সিনিয়র চিকিৎসক। আরজি কর হাসপাতালের ডাক্তাররা এই গণইস্তফা দিয়েছেন পবিত্র দিনে।’
আরও পড়ুন: গণইস্তফা দিয়ে চাপ বাড়ালেন ডাক্তাররা, নবান্ন দিল কড়া বার্তা, কারা রইলেন চাপে?
রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্ক এখন এতটাই খারাপ যে কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়ছেন না সুযোগ পেলে। তাই রাজ্যপাল এখন সুযোগ পেয়েছেন। সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছেন সিভি আনন্দ বোস। চাঁচাছোলা ভাষায় রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘নিজের বিবেককে নাড়া দেওয়া উচিত। যদি রাজ্যে কোনও দায়িত্বশীল সরকার থেকে থাকে তাহলে ভুল সংশোধন করুন এবং বাংলার মানুষের কাছে ক্ষমা চান।’ যদিও রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই জুনিয়র ডাক্তারদের একাধিক দাবি মেনে নিয়েছে। দফায় দফায় বৈঠকে বসেছে। মাঝে উঠে গিয়েছিল কর্মবিরতি। কিন্তু তা আবার শুরু হয়েছে।
সাগর দত্ত হাসপাতালে রোগীর পরিবারের হাতে চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনা নিয়ে আবার কর্মবিরতি থেকে শুরু করে আমরণ অনশন চলছে। এখন আবার ১০ দফা দাবি তুলতে শুরু করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তবে কলকাতা পুলিশ যে সঠিক পথে তদন্ত করেছিল সেটা এখন দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। কারণ সিবিআই যে চার্জশিট দিয়েছে তাতে মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় বলেই উল্লেখ করা হয়েছে। তবে রাজ্যপালের কথায়, ‘এখনও যদি ভুল শুধরে না নিয়ে সরকার কাজ চালিয়ে যায় তাহলে সেটা হবে বিনাশ কালে বিপরীত বুদ্ধি। মানুষের ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি যাঁরা ক্ষমতায় আছেন তাঁদের থেকে। কখনও মানুষের ক্ষমতাকে ছোট করে দেখা উচিত নয়।’