আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। আর এই অপরাধের তদন্ত করছে সিবিআই। এই আবহে চলছে জোরদার আন্দোলন। আজ, মঙ্গলবার এই ঘটনা এবং সুপ্রিম কোর্টের শুনানি শেষে রাজ্য সরকারকে তোপ দাগলেন বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। নয়াদিল্লি থেকে তিনি তোপ দাগেন। আর সরাসরি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করেন। সংবাদসংস্থা পিটিআই–কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নানা অভিযোগ এবং সমালোচনা করেন রাজ্যপাল। আর আজ নির্যাতিতার বাবার সঙ্গে টেলিফোনে কথাও বলেছেন।
ধর্ষণ করে খুনের অপরাধ করার অভিযোগে এখন সিবিআইয়ের হাতে আছে সঞ্জয় রায়। তাকে দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে। কিন্তু এখনও তল খুঁজে পায়নি সিবিআই। কেটে গিয়েছে একসপ্তাহ। সিবিআই অফিসাররা কাউকে গ্রেফতার করতে পারেননি। যা নিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে তদন্তের স্ট্যাটাস রিপোর্ট দিতে হবে সিবিআইকে। এই আবহে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান সরকার এখন জনগণের বিশ্বাস হারিয়েছে। কলকাতার একটি হাসপাতালে এক মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা সমাজের জন্য সব থেকে লজ্জাজনক মুহূর্ত।’
আরও পড়ুন: আরজি কর হাসপাতালের সংস্কারে অনুমতি নেয়নি পুর হেরিটেজ কমিটির, বিতর্ক তুঙ্গে
জনরোষ তৈরি হচ্ছে সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে। গত কয়েক মাস ধরেই হাসপাতালে সঞ্জয় রায়ের বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়। অধিকাংশ রাতেই সে প্রচণ্ড মদ্যপান করে আরজি কর হাসপাতালে ঢুকত। ইচ্ছামতো ঘোরাঘুরি করত হাসপাতালে বলে সূত্রের খবর। সেই বিষয়ে রাজ্যপাল কিছু বলেননি। বরং তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা নিয়ে মিছিল করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে বক্তৃতাও করেন। মুখ্যমন্ত্রীর এইসব ভাষণ নানা অলঙ্কারে খচিত। তবে এই ঘটনায় তাঁর সামগ্রিক অবস্থান কী? বাংলা একটি প্রবাহিত অবস্থায় আছে। সরকারের প্রতি আস্থা হারিয়েছে ছাত্ররা। যুবকরা ভীত, মহিলারা হতাশ। মহিলা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে হতাশার অনুভূতি। রাজ্য সরকার জনগণকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।’
এছাড়া অপরাধীর ফাঁসি চেয়ে পথে নামেন খোদ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআইকে ডেডলাইন বেঁধে দেন। অপরাধীকে ধরে তার ফাঁসির ব্যবস্থা করার দাবি জানান। কিন্তু রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এসবের সমালোচনা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। নির্যাতিতার বাবাকে আজ ফোন করে বাড়ি যাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘সর্বোচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ শুনে দেশ স্বস্তি পেল। আর এই নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু এই ঘটনার পর সরকারের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। সাম্প্রতিক ঘটনাটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে সরকারের গাফিলতি।’