আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। এই নিয়ে এখন তোলপাড় গোটা রাজ্য। রাজপথে মিছিল, রাত দখল থেকে স্লোগান সবই দেখেছে বাংলার মানুষ। জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি থেকে সিবিআই তদন্ত এবং মামলা চলে গিয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এই আবহে বিধানসভায় পাশ হয়েছে ‘অপরাজিতা’ বিল। এটি ধর্ষণ বিরোধী কঠোর আইনের বিল। এই বিল নিয়ে রাজ্য সরকারের আচরণে অসন্তোষ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই বিলের সঙ্গে প্রয়োজনীয় ‘টেকনিক্যাল রিপোর্ট’ পাঠায়নি রাজ্য সরকার বলে অভিযোগ তোলেন। তবে আজ, শুক্রবার বিকেলে ‘টেকনিক্যাল রিপোর্ট’ হাতে আসে রাজ্যপালের। আর তার পরই তা পাঠিয়ে দেওয়া হল রাষ্ট্রপতির দরবারে।
এদিকে আজ শুক্রবার প্রথমবার আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষের বাড়িতে হানা দিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তার মধ্যেই রাজভবনের পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই খবর জানিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়েছে, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছ থেকে টেকনিক্যাল রিপোর্ট মিলেছে। তারপর এই বিল রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য পাঠানো হল।’ গত ৩ সেপ্টেম্বর রাজ্য বিধানসভায় ‘অপরাজিতা বিল’ পাশ হওয়ার পর সেটা রাজভবনে পাঠানো হয়েছে। তবে রাজভবনের পক্ষ থেকে কড়া সমালোচনা করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। এক্স হ্যান্ডেলে লেখা হয়েছে, ‘এই বিলে সম্মতি না দিলে রাজভবনের বাইরে ধরনা দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যপালকে ভয় দেখানো হয়েছে। তাই সরকারকে পরামর্শ নিজেদের ব্যর্থতার দিকে তাকাতে।’
এই ঘটনা নিয়ে এখন সরগরম রাজ্য–রাজনীতি। তবে কোনও বিল কেন আনা হয়েছে, কী ভাবে আনা হয়েছে, সেটা বিস্তারিত একটি রিপোর্ট বিলের সঙ্গেই জমা দিতে হয়। তাকেই বলে ‘টেকনিক্যাল রিপোর্ট’। কেন্দ্রীয় আইন ব্যবস্থার সঙ্গে রাজ্যের আনা ওই বিলের মিল কতটা সেটা বিস্তারিত জানাতে হয়। রাজ্যপালের সঙ্গে এই বিলের টেকনিক্যাল রিপোর্ট নিয়ে কথা হয় রাজ্যের মুখ্যসচিবের। তারপরই সেটা রাজভবনে আসে। এই বিলের সঙ্গে মহারাষ্ট্র, অরুণাচল প্রদেশ এবং অন্ধ্রপ্রদেশের বিলের মিল আছে। রাজ্য সরকার এই বিল তাড়াহুড়ো করে পাশ করিয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে রাজভবনের তরফে।
আরও পড়ুন: তরুণী চিকিৎসকের হত্যার দিনই কুচকাওয়াজের মহড়া কেন? প্রশ্ন তুলে দিল আইএমএ
অপরাজিতা বিল রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হলেও রাজ্য সরকারকে নানা কথা বলা হয়েছে রাজভবনের পক্ষ থেকে। আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় মানুষ এখন বিচার চাইছে। তাই বিল আইনে পরিণত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে রাজি নয় মানুষ। তাঁরা বিচার চান যে আইন এখন বলবৎ আছে তার মধ্যে থেকেই। রাজ্য সরকারকে সেটা কার্যকর করতে হবে ভালভাবে। রাজ্য সরকারের কর্তব্য মেয়ে হারানো মায়ের চোখের জল মোছানো বলে এক্স হ্যান্ডেলে উল্লেখ করেছে রাজভবন।