আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। তার জেরে কলকাতার রাজপথ উত্তাল হয়ে উঠেছে। এখন নানা মিছিল, ধরনা জারি আছে। সঙ্গে উঠেছে স্লোগান–উই ওয়ান্ট জাস্টিস। আর এই আবহে দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআই গ্রেফতার করেছে আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে। আর তার পরই যাবতীয় দুর্নীতির ‘আখড়া’ ভাঙতে তৎপর হল কর্তৃপক্ষ। স্ক্যানারে সন্দীপ ঘনিষ্ঠ একাধিক চিকিৎসক রয়েছেন বলে সূত্রের খবর। এমনকী রয়েছেন একাধিক রেসিডেন্স চিকিৎসকও। এবার তাঁদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগ পেয়ে কড়া শাস্তির পথে হাঁটতে চলেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মোট ৫১ জনকে সাসপেন্ড করা হল। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলবে।
এদিকে এই সাসপেন্ড হওয়া ৫১ জনের মধ্যে হাউস স্টাফ, জুনিয়র ডাক্তার–সহ অনেকে রয়েছেন বলে খবর। এবার তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলবে। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর তদন্ত কমিটির সামনে তাঁদের হাজিরা দিতে নোটিশ জারি করা হয়েছে। ততদিন পর্যন্ত তাঁদের হাসপাতালের যে কোনও কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে নিষেধ করা হয়েছে। তাঁদের হাসপাতালে আসতে হবে। নির্দিষ্ট কাজের সময় পর্যন্ত হাসপাতালে থাকতেও হবে। কিন্তু কোনওরকম চিকিৎসা পরিষেবায় হাত লাগানো যাবে না। অর্থাৎ ৫১ জন সাসপেন্ড হওয়া চিকিৎসক কাজ না করে শুধু বসে কাটাবেন। যাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে তাঁরা প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
আরও পড়ুন: ‘বিনীত গোয়েল আপরাইট অফিসার’, দল–সাংসদ পদ ছেড়েও পুলিশ কমিশনারের প্রশংসায় জহর
অন্যদিকে আরজি কর হাসপাতালের স্পেশাল কলেজ কাউন্সিল এই নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। সোমবার স্পেশাল কাউন্সিলের বৈঠক হয়। আর ওই বৈঠকের পরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই ৫১ জন আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাই ৫১ জন চিকিৎসককে তদন্ত কমিটির সামনে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই তালিকার শীর্ষে আছেন রেডিওথেরাপি বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্স ডক্টর সৌরভ পাল। তাঁর বিরুদ্ধেই একগুচ্ছ অভিযোগ আছে। প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে এই হাসপাতালে এবং জেলার বিভিন্ন হাসপাতালগুলিতেও ‘দাদাগিরি’ চালাতেন সৌরভ বলে অভিযোগ।
এছাড়া কোথায় কোন ডাক্তার নিয়োগ হবে সেটাও ঠিক করতেন সৌরভ। তদন্ত কমিটির মতে, সৌরভ পাল এবং কয়েকজন মিলে সিন্ডিকেট চালাতেন। যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ৫১ জনের মধ্যে ২০ জন হাউস স্টাফ। আবার দু’জন সিনিয়র রেসিডেন্ট, একজন রিসার্চ সায়েন্টিস্ট এবং ১১ জন ইন্টার্ন। একমাত্র তদন্ত কমিটি ডাকলে তবেই তাঁরা হাসপাতালে ঢুকতে পারবেন বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ, মঙ্গলবার ৫১ জনের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলেন আরজি কর হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ ডাক্তার সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায়। তারপরই তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তির বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়। বুধবার থেকে শাস্তি কার্যকর হতে পারে।