আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। এই নিয়ে এখন তোলপাড় গোটা রাজ্য। রাজপথে মিছিল, রাত দখল থেকে স্লোগান সবই দেখেছে বাংলার মানুষ। জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি থেকে সিবিআই তদন্ত এবং মামলা চলে গিয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এই আবহে যেদিন উদ্ধার হয়েছিল তরুণী চিকিৎসকের দেহ, সেদিন ৯ অগস্ট ভোর সাড়ে ৫টায় আরজি কর হাসপাতাল থেকে স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজের মহড়া শুরু করা নিয়ে একটি নির্দেশিকা দিয়েছিল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। সেই নির্দেশিকা সামনে আসতেই শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। এবার সেই নির্দেশিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল চিকিৎসকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের পশ্চিমবঙ্গ শাখা।
এদিকে আজ শুক্রবার প্রথমবার আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষের বাড়িতে হানা দিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তার মধ্যেই গত ৬ অগস্ট স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে জারি করা নির্দেশিকা নিয়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। কারণ এই নির্দেশিকায় স্পষ্ট করে উল্লেখ ছিল, ৯, ১০, ১৩ অগস্ট কলকাতার আরজি কর হাসপাতাল থেকে এসএসকেএম পর্যন্ত কুচকাওয়াজের মহড়া চলবে। আর সেই মহড়ায় অভীক দে, সৌত্রিক রায় এবং সৌরভ পাল উপস্থিত থাকবেন। এই তিনজনই চিকিৎসক। তার মধ্যে অভিককে সাসপেন্ড করেছে স্বাস্থ্যভবন। এই ঘটনা নিয়ে আইএমএ প্রশ্ন তোলে, কেমন করে আরজি কর হাসপাতাল থেকে মহড়া শুরু করার কথা বলা হয়েছিল? তাও আবার ওই ‘মর্মান্তিক’ দিনের সকালে?
আরও পড়ুন: ‘সব অভিযোগই মিথ্যে, কোনও দুর্নীতি করেননি সন্দীপ’, ইডির সামনে গর্জে উঠলেন স্ত্রী
এই ঘটনা নিয়ে এখন সরগরম রাজ্য–রাজনীতি। তবে জটিলতার এখানেই শেষ নয়। জটিলতা আরও বড় আকার নেয় একইরকম আর একটি নির্দেশিকা সামনে আসায়। সেখানে আবার সই রয়েছে অন্য আর একজন ব্যক্তির। আর মহড়ার দায়িত্বে অন্য সদস্যরা। সেক্ষেত্রে দু’টি নির্দেশিকার মধ্যে কোনটি আসল? প্রশ্ন তুলেছে আইএমএ। যা নিয়ে বেড়েছে বিড়ম্বনা। আর এই নির্দেশিকা কেমন করে প্রকাশ্যে এল সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারের পরে? এবার আইএমএ’র প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে নামতে পারে সিবিআই। তাতে বিপদ বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।
সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তুলে ইডি তদন্তের দাবি করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার আখতার আলি। তবে তদন্তভার সিটের থেকে নিয়ে সিবিআইকে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। পরে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির মামলায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে ইডি। আইএমএ এবার সিবিআইয়ের কাছে সত্য বের করার জন্য অনুরোধ করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তারা লিখেছে, ‘আশা করি, আপনারা সত্য বের করবেন, যা কলকাতা পুলিশ করেনি। অভীক দে ঘটনাস্থলে ছিলেন সেটা নিয়ে আমাদের দেওয়া চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেনি কলকাতা পুলিশ। বরং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই তারা অভীক দে’কে ফিঙ্গার প্রিন্ট বিশেষজ্ঞ বলে দাবি করেছিল।’