আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। আর এই অভিযোগে এখন প্রতিবাদের ঝড় বইতে শুরু করেছে রাজ্য রাজনীতিতে। সব রাজনৈতিক দলই পথে নেমেছে। ফাঁসির দাবি, বিচার চাই এবং উই ওয়ান্ট জাস্টিস স্লোগান শোনা যাচ্ছে সকলের মুখে। এবার আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ করতে লালবাজার অভিযানের ডাক দিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। আগামী ২ সেপ্টেম্বর কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের পদত্যাগের দাবিতে এই অভিযান করা হবে। আবার ৩ সেপ্টেম্বর বাংলার সব সরকারি–বেসরকারি এবং প্রাইভেট চেম্বারের চিকিৎসকদের পেনডাউন করার আহ্বান জানালেন তাঁরা।
গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার জেরে গোটা রাজ্যে তুমুল বিক্ষোভ আছড়ে পড়ে। গর্জে ওঠে চিকিৎসক মহল। অপরাধীর শাস্তির দাবিতে রাজপথে মিছিল নামে। গত বুধবার মেয়ো রোডে তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সভা থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফিরতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতি আমার সমর্থন আছে। ওরা বন্ধুর জন্য আন্দোলন করছে। আপনাদের ক্ষোভ আছে। অভিমান আছে। আমি সেটা বুঝি। কিন্তু এবার আস্তে আস্তে কাজে যোগ দিন। সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যগুলিকে বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। কিন্তু আমি আপনাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেব না। আমরা পদক্ষেপ করলে কেরিয়ার নষ্ট হবে। পাসপোর্ট–ভিসা পেতে সমস্যা হবে।’ এই মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়।
আরও পড়ুন: ‘সে লড়াই করেই হচ্ছে বড়’, এবার পাল্টা সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট শুরু পুলিশ কর্তাদের
এবার এমন আবহে আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘আমি ডাক্তারদের হুমকি দিইনি। আমার মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।’ আগের মন্তব্য হুমকি বলেই চাউর করা হয়েছিল। দেশজুড়ে আন্দোলন চলছে আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার প্রতিবাদে। বিদেশের মাটিতেও প্রতিবাদ পৌঁছেছে। আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসকরাও আন্দোলনে নেমেছেন। চলছে কর্মবিরতি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা যান আরজি কর হাসপাতালে বৈঠক করতে। সেখানে হাসপাতালের আধিকারিকদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা বৈঠক করেন। কিন্তু তাতেও কাটেনি জট। এমনকী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেদনেও কাজে ফেরেননি কেউ।
এছাড়া আজ, শুক্রবার রাজ্যের জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন ডব্লিউবিজেডিএফ এক বিবৃতি পেশ করে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমাদের প্রতিনিধিরা গতকালই মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের বক্তব্য পরিষ্কার করে জানিয়েছেন বিভিন্ন নিউজ চ্যানেলে ও প্রেস বিবৃতিতে। সব প্রতিকূলতা ও হুমকির বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলনের সারমর্ম প্রত্যেকদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের পাঁচ দফা দাবি না মেটা পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।’