আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় জুনিয়র ডাক্তাররা লাগাতার আন্দোলন করেছেন। উদ্দেশ্য ছিল একটাই—নির্যাতিতার দোষীদের শাস্তি চাই। সেখান থেকেই শুরু হয় সরকারি হাসপাতালে অচলাবস্থা। কিন্তু এই মামলা তো সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। আর তদন্ত করছে সিবিআই। সুতরাং রাজ্যের এখানে কোনও কিছু করার নেই। তবে ঘটনার দিন থেকে সিবিআই তদন্তভার নেওয়ার আগে পর্যন্ত কলকাতা পুলিশ তদন্ত করেছিল। আর সেটা নিয়ে খুশি নন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাই কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তোলেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে চলেছে কর্মবিরতি। তবে পঞ্চমবারের চেষ্টায় সোমবার রাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক সফল হয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের। এতকিছুর পরও জুনিয়র ডাক্তারদের ‘বাচ্চা ছেলেমেয়ে’ বলে কাজে যোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন মেয়র।
এদিকে আজ সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি ছিল। সেখানে জুনিয়র ডাক্তারদের পক্ষে আইনজীবী সওয়াল করে জানান, কাজে ফিরতে চান তাঁরা। জিবি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কথা রেখেছেন। সরিয়ে দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা পর্যন্ত সকলকে। সেখানে এখনও জানানো হয়নি কবে কাজে যোগ দেবেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এবার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘জুনিয়র ডাক্তাররা বাচ্চা ছেলেমেয়ে। কর্তব্য মেনে ফিরে আসা উচিত কাজে। সরকারের প্রধান যখন কোনও কথা বলেন, তখন সেটাই অর্ডার। তার পরও জুনিয়র ডাক্তাররা এখনও পর্যন্ত আন্দোলন করছেন। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। ওরা বাচ্চা ছেলেমেয়ে তাই বুঝতে পারছে না।’
আরও পড়ুন: নাগাড়ে বৃষ্টি ও ডিভিসির ছাড়া জলে বানভাসী ঘাটাল, মানুষের পাশে এসে দাঁড়ালেন সাংসদ দেব
অন্যদিকে চিকিৎসা না পেয়ে মানুষ মারা যাচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা। জুনিয়র ডাক্তাররা কাজে না ফিরলে কী করব? আজ এই প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টে রাখেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। সেখানে আজ, মঙ্গলবার কলকাতা পুরসভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে দেন মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তাঁর বক্তব্য, ‘মুখ্যমন্ত্রী সোমবার জুনিয়র ডাক্তারদের ডেকে কথা বলেছেন। জুনিয়র ডাক্তারদের কী সুবিধা–অসুবিধা শুনেছেন। আর সমস্যার সমাধান কালো বেলুন উড়িয়ে নয়। আলোচনার মধ্যে দিয়ে করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী শুধু তাঁদের দাবি নয়, তাঁদের সুরক্ষার জন্য ব্যবস্থা নেবেন। আর ভারতীয় সংবিধানের উপর দায়িত্ব রাখা আমাদের কর্তব্য।’
এছাড়া জুনিয়র ডাক্তারদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জিবি বৈঠকের তারিখের উপর কর্মবিরতি প্রত্যাহারের দিনক্ষণ নির্দিষ্ট হবে। আর সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মেয়রের কথায়, ‘হেড অব দ্য ভারত মৌখিকভাবেই পুতিনের সঙ্গে বাইডেনের সঙ্গে কথা বলে আসেন। এরপর সেক্রেটারি লেভেলে হয় এক্সচেঞ্জ অফ ফাইল। হেড অব দ্য গর্ভমেন্ট যখন বলেছেন তখন সেটাই হল অর্ডার। আর সেইটাই হবে। এটাই প্রথা। আমাদের ক্যাবিনেটও যখন হয় তখন সব লেখা পড়ার মধ্যে হয় না। সেটা মিনিটস হয়ে অ্যাকশনে পরিবর্তন হয়। এটা ওরা হয়ত জানে না। বাচ্চা ছেলেমেয়ে। বাচ্চারা এটা জানে না। যেটা এখন কর্তব্য সেটা কাজে ফিরে আসা।’