আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। তার জেরে কলকাতার রাজপথ উত্তাল হয়ে উঠেছে। এখন নানা মিছিল, ধরনা জারি আছে। সঙ্গে উঠেছে স্লোগান–উই ওয়ান্ট জাস্টিস। আর এই আবহে গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘রাত দখল’ কর্মসূচি নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। এই রাত দখল করার নামে রোজ রাস্তায় নামলে সাধারণ মানুষ এবং প্রবীণ নাগরিকদের অসুবিধা হয় বলে তিনি জানিয়েছিলেন। দুর্গাপুজোর সময় রাস্তায় এমনিতেই বিপুল পরিমাণ মানুষ নামে। তখন পর্যাপ্ত পরিমাণ পুলিশ থাকে। তাই তখন এমন আন্দোলন হলে মানুষের সমস্যা হবে বিস্তর। তাই এবার কড়া সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে কলকাতা পুলিশ।
এদিকে আরজি কর হাসপাতাল নিয়ে ১৭ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি আছে। আর বিজেপি ঠিক করেছে কলকাতায় দুর্গাপুজোর সময় আন্দোলন করবে। এই পরিস্থিতিতে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল থানাগুলিকে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, আগাম অনুমতি ছাড়া শহরে কোনও মিছিল–মিটিং করা যাবে না। অনেক সময়ই দেখা যাচ্ছে নাগরিক সমাজের নামে মিছিল সংগঠিত করলেও তার পিছনে হাত রয়েছে রাজনৈতিক দলের। ১৪ অগস্টের মতো পুরোদস্তুর স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ নেই সব মিছিল মিটিংয়ে। তাই এমন পদক্ষেপ বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোর সময় আন্দোলন–পথসভা করার সিদ্ধান্ত বিজেপির, শহর থেকে গ্রামে চলবে কর্মসূচি
অন্যদিকে আর শহরে দুর্গাপুজোর সময় পথসভা করলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হবে। এই সব মিটিং–মিছিল হলে দর্শনার্থীরা বিপদে পড়বেন রাস্তায়। এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন রাজ্য সরকারের পক্ষের আইনজীবী কপিল সিবাল। তিনি সর্বোচ্চ আদালতে বলেছিলেন, সুপ্রিম কোর্ট শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে বাধা না দেওয়ার কথা বলেছে। কিন্তু রোজ পথ আটকে মিছিল–মিটিং করে সাধারণ মানুষের অসুবিধা তৈরি করা হচ্ছে। তার জবাবে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, ‘সরকার এই বিষয়ে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করতে পারে। তাতে কোনও বাধা নেই।’
আর এখন কলকাতার ধর্মতলায় ওয়াই চ্যানেলে বিজেপির ধরনা চলছে। যা চলবে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। পরদিন বিশ্বকর্মা পুজো। সেদিন সুপ্রিম কোর্টে পরবর্তী শুনানি রয়েছে। এই কথা শোনার পর থেকেই কলকাতা পুলিশ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আর অনুমতি ছাড়া শহরে মিটিং–মিছিল নয়। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক লালবাজারের এক অফিসার বলেন, ‘মানুষকে অসুবিধায় ফেলার অধিকার কারও নেই। খুব শীঘ্রই এই সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আনা হবে। আপাতত থানাগুলিকে জানানো হয়েছে। অনুমতি ছাড়া মিটিং মিছিল আর শহরে করা যাবে না।’