আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। তার জেরেই এখন উত্তাল বাংলা। জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলনে নেমেছেন। বারবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেষ্টা করলেও বৈঠক সম্ভব হয়নি। বরং অচলাবস্থার দিন বেড়েই চলেছে। এই আবহে এখন কিছুদিন অতিরিক্ত কোনও ছুটি না নেওয়ার বার্তা প্রশাসনিক কর্তা এবং অফিসারদের দিল নবান্নের শীর্ষস্তর। আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর হাসপাতালের বিষয়ে শুনানি রয়েছে। তার আগে প্রশাসনিক প্রস্তুতি চলছে চরমে। এই আবহে সংশ্লিষ্ট দফতরের অফিসারদেরই এই বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তা নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
নবান্নে এখন জোর কাজের তৎপরতা শুরু হয়েছে। কারণ রাজ্য সরকারের বক্তব্যও জানাতে হয় সুপ্রিম কোর্টে। তার নথিপত্র তৈরি করার কাজ শুরু হয়েছে। তাই শুক্রবার কয়েকটি দফতর, জেলাশাসক, জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকেই বাড়তি ছুটি না নেওয়ার বার্তা দেওয়া গিয়েছে। শনিবার রাজ্য সরকারের বেশকিছু দফতরে সাপ্তাহিক ছুটি থাকে। তার উপর এই শনিবার করম পুজো উপলক্ষ্যে ছুটি ঘোষণা করেছিল নবান্ন। তবে স্বরাষ্ট্র, স্বাস্থ্য, মুখ্যসচিবের দফতর–সহ কয়েকটি বিভাগের অফিসারদের হাজির হতে হয়েছিল বলে নবান্ন সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন: মেয়রের মস্কো সফর বাতিল করে দিল বিদেশমন্ত্রক, বাড়ল কেন্দ্র–রাজ্যের সংঘাতের আবহ
বেশ কিছু রিপোর্ট তৈরি করতে এখন ব্যস্ত নবান্নের আমলারা। কারণ সুপ্রিম কোর্ট গত শুনানিতে বেশ কয়েকটি পর্যবেক্ষণ দিয়েছিল। সেখানে ময়নাতদন্তের চালান থেকে শুরু করে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির বিষয়টিও ছিল। এমনকী দ্রুত জুনিয়র ডাক্তারদের দ্রুত কাজে ফেরার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালতের সেই নির্দেশকে সামনে রেখে রাজ্য সরকার বারবার আলোচনায় ডেকেছিল আন্দোলনরত চিকিৎসকদের। কিন্তু শনিবার পর্যন্ত কোনও রফাসূত্র বের হয়নি। তাই আগামী ১৭ তারিখ সুপ্রিম কোর্টে সমস্ত তথ্য তুলে ধরতে চায় রাজ্য সরকার বলে সূত্রের খবর। কতবার চেষ্টা করা হয়েছিল, কী কী চেষ্টা করা হয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রী নিজে কেমন ভূমিকা নিয়েছিলেন–সহ দু’পক্ষের চিঠি তুলে ধরা হবে।
ইতিমধ্যেই এই অচলাবস্থার মধ্যে মৃতদের পরিবারগুলিকে ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিকিৎসকদের ধরনা মঞ্চে পৌঁছে গিয়ে কথা বলেছেন। নবান্নে বৈঠকের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেছেন। এমনকী কালীঘাটে নিজের বাড়িতে বৈঠক করার জন্য অনুনয়–বিনয় পর্যন্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরও কোনও রফাসূত্র বের হয়নি। আর শনিবার স্বাস্থ্যভবনের সামনে অবস্থান মঞ্চে উপস্থিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘১৭ তারিখে শুনানি রয়েছে। আমি চাই না আপনাদের কোনও ক্ষতি হোক।’ এই সমস্ত তথ্য ও নথি তৈরি করে তুলে দেওয়া হবে সুপ্রিম কোর্টকে। তাই সংশ্লিষ্ট দফতরগুলির অফিসারদের অতিরিক্ত ছুটি না নিতে বলা হয়েছে।