আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। আর তাতে মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করলেও তদন্ত করছে সিবিআই। তাই মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় এখন সিবিআই হেফাজতে। সেখানে তাকে দফায় দফায় জেরা করা হয়েছে। শুক্রবার তাকে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। তবে সিবিআই যে রিমান্ড নোট গতকাল আদালতে দিয়েছে সেখান থেকে জানা যাচ্ছে, এই ঘটনার সঙ্গে একজনই জড়িত। আর সে সঞ্জয় রায়। এখানে কোনও গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। সুতরাং এতদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় যা দাবি করা হলে সেটা স্রেফ গুজব।
এবার পলিগ্রাফ পরীক্ষা হবে সঞ্জয় রায়ের। এই পরীক্ষায় সম্মতির বিষয়ে বিচারক তার কাছে জানতে চেয়েছিলেন। সঞ্জয়ের জবাব ছিল, ‘আমি নির্দোষ। আমি কিছু করিনি। আমাকে নিশানা করা হয়েছে। এই পরীক্ষা হয়তো তার জন্য। আমি যে নির্দোষ এই পরীক্ষায় হয়তো তা প্রমাণ হবে।’ সঞ্জয় রায়ের আইনজীবী কবিতা সরকার পলিগ্রাফ পরীক্ষা সম্পর্কে বুঝিয়ে ছিলেন অভিযুক্তকে। তারপরও এমন মন্তব্য বেশ চাপে ফেলে দেয় সিবিআইকে। নির্যাতিতার পরিবারও গণধর্ষণের দাবি করেছিলেন। কিন্তু তা উড়িয়ে দিয়েছে সিবিআই। তাদের দাবি, এই ঘটনা একাই ঘটিয়েছে সঞ্জয়। ১০ দিন কেটে গেলেও সিবিআই এখনও এমন কোনও তথ্য পায়নি, যেটা তদন্তের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।
আরও পড়ুন: ‘আমি নির্দোষ, কিছু করিনি’, শিয়ালদা আদালতে দাঁড়িয়ে নিজের স্বপক্ষে বয়ান সঞ্জয়ের
সিবিআই আদালতে দাবি করেছে, মিথ্যা কথা বলছে সঞ্জয় রায়। হেফাজতে থাকাকালীন নানা ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে তদন্তের অভিমুখ ঘোরাতে চাইছে সে। সত্যিটা ঠিক কী? এটা খুঁজে বের করতেই এবার সঞ্জয়ের পলিগ্রাফ পরীক্ষা করতে চায় সিবিআই। সিবিআই এবং সিট দু’জনেরই দাবি, সঞ্জয় আগে অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। সিসিটিভি ফুটেজ এবং কিছু সরঞ্জাম হাতে এসেছে। এই সিসিটিভি ফুটেজের সঙ্গে সঞ্জয়ের দেওয়া বয়ানের মিল পাওয়া যায়নি। এই মূল অভিযুক্তকে কলকাতা পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাহলে সিবিআই করল কী? উঠছে প্রশ্ন।
এছাড়া সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন সঞ্জয় রায় তদন্তকারীদের জানিয়েছে, ৯ অগস্ট ভোর ৬টা নাগাদ সে চতুর্থ তলায় যায়। সেখানে এক পরিচিতকে দেখে ফেরার সময় খেয়াল করে, সেমিনার হলের দরজা খোলা। সে হলের ভিতরে ঢুকেছিল। কিন্তু কাউকে দেখতে পায়নি। গোটা ঘটনায় তাকে ফাঁসানো হচ্ছে। যদিও সঞ্জয় তখন হাসপাতালের ভিতরে কাউকে দেখতে গিয়েছিল সেটার কোনও প্রমাণ সিবিআই পায়নি। সিবিআই সূত্রে খবর, অন্য জুনিয়র ডাক্তার এবং নার্সদের থেকে ওই সিভিক ভলান্টিয়ার আগেই জেনেছিল ওই তরুণী রাতে একা রয়েছেন। কিন্তু কারা এই খবর দিয়েছিল? খুঁজছে সিবিআই।