আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। আর এই অপরাধের সঙ্গে নাম জড়িয়ে যায় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের। আগে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এক মহিলা চিকিৎসকের শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ ওঠে। কিন্তু এই সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এই কাজে মদত দিত কারা? উত্তর খুঁজছে সিবিআই। এমন আবহে এবার দুই দুঁদে মহিলা অফিসারের উপর ভরসা করছে সিবিআই। কারণ সাতদিন হয়ে গেল সিবিআই বিশেষ কোনও দাগ কাটতে পারেনি তদন্তে।
ধর্ষণ করে খুনের অপরাধ করার অভিযোগে এখন সিবিআইয়ের হাতে আছে সঞ্জয় রায়। তাকে দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে। কিন্তু এখনও তল খুঁজে পায়নি সিবিআই। একসপ্তাহ অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছে। সিবিআই অফিসাররা কাউকে গ্রেফতার করতে পারেননি। এমনকী তদন্তে নতুন কোনও মোড় এসেছে তাও প্রকাশ্যে আনতে পারেননি। এমন অবস্থায় চাপ বাড়তে শুরু করেছে সিবিআইয়ের উপর। তাই ধৃত সঞ্জয় রায়ের পলিগ্রাফ পরীক্ষা বা লাই ডিটেক্টর টেস্ট করা হবে। এবার তদন্তের দায়িত্বে এসেছেন সম্পত মীনা। তিনি ঝাড়খণ্ডের ১৯৯৪ ব্যাচের আইপিএস অফিসার। সামলেছেন হাথরসের ধর্ষণ–খুন এবং উন্নাও ধর্ষণের মামলা। তাঁর সঙ্গে আছেন সীমা পাহুজা। তিনিও হাথরসের তদন্তকারী দলের অন্যতম অফিসার ছিলেন।
আরও পড়ুন: মহিলাদের শ্লীলতাহানি–যৌন হেনস্তা সঞ্জয় আগেও করেছে, সিবিআই হাতে পেল নয়া তথ্য
জনরোষ তৈরি হচ্ছে সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে। গত কয়েক মাস ধরেই হাসপাতালে সঞ্জয় রায়ের বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়। অধিকাংশ রাতেই সে প্রচণ্ড মদ্যপান করে আরজি কর হাসপাতালে ঢুকত। ইচ্ছামতো ঘোরাঘুরি করত হাসপাতালে বলে সূত্রের খবর। আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার কিনারা করতে অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর সম্পত মীনার নেতৃত্বে ২৫ জনের টিম এখন ঘটনার তদন্ত করছে। আর গ্রাউন্ড স্তরে তদন্ত করছে সীমা পাহুজার টিম। এই সীমা পাহুজাই হিমাচল প্রদেশের দশম শ্রেণির ছাত্রী গুড়িয়ার ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার কিনারা করেছিলেন।
এছাড়া অপরাধীর ফাঁসি চেয়ে পথে নামেন খোদ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআইকে ডেডলাইন বেঁধে দেন। অপরাধীকে ধরে তার ফাঁসির ব্যবস্থা করার দাবি জানান। সেখানে সিবিআই এখনও তেমন কিছু করতে পারেনি। সঞ্জয় রায়ের এতটাই সাহস বেড়ে গিয়েছিল যে, সে রাস্তায় নানা সময়ে মহিলাদের শ্লীলতাহানি ও হেনস্তা করত। কিন্তু তার পরও ওর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ হয়নি। ধর্ষণ–খুনের ঘটনার দিন বিকেলে দক্ষিণ কলকাতার চেতলা অঞ্চলেও সঞ্জয় এক মহিলার শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। আগামী ২৩ অগস্ট আদালতে তোলা হবে ধৃত সঞ্জয় রায়কে। তখন সিবিআই আদালতে দাঁড়িয়ে কি জানায় সেটাই দেখার। তার মধ্যে এই দুই মহিলা দুঁদে অফিসারের উপস্থিতি আশার আলো জাগাচ্ছে।