আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। আর এই অভিযোগে এখন প্রতিবাদের ঝড় বইতে শুরু করেছে রাজ্য রাজনীতিতে। সব রাজনৈতিক দলই পথে নেমেছে। ফাঁসির দাবি, বিচার চাই এবং উই ওয়ান্ট জাস্টিস স্লোগান শোনা যাচ্ছে সকলের মুখে। এবার এই আবহে অনেকেই পুলিশের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলতে থাকেন। স্লোগান দেওয়া হয় পুলিশকে লক্ষ্য করে। ‘পুলিশ তুমি চিন্তা করো, তোমার মেয়েও হচ্ছে বড়’—এই স্লোগানে সরগরম হয়ে ওঠে কলকাতার রাজপথ। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই স্লোগান পোস্টার আকারে দেওয়া হতে থাকে। এবার পাল্টা স্লোগান দিতে শুরু করল পুলিশ অফিসাররা। সোশ্যাল মিডিয়ায় তা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।
গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার জেরে গোটা রাজ্যে এই নিয়ে তুমুল বিক্ষোভ–প্রতিবাদ আছড়ে পড়ে। গর্জে ওঠে চিকিৎসক মহল। অপরাধীর শাস্তির দাবিতে রাজপথে মিছিল নামে। এমনকী ২৭ অগস্ট নবান্ন অভিযান করে পশ্চিমবঙ্গ ছাত্রসমাজ। নানা প্রতিবাদ মিছিল থেকে জমায়েতে উঠতে থাকে পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান। ‘পুলিশ তুমি চিন্তা করো, তোমার মেয়েও হচ্ছে বড়’। এবার তারই পাল্টা চলে এল পুলিশের পক্ষ থেকে। পুলিশ কর্তাদের পাল্টা স্লোগান, ‘পুলিশের মেয়ের চিন্তা ছাড়ো, সে লড়াই করে হচ্ছে বড়।’ এবার একে অপরের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: ‘জুট ব্যাগের বরাতের পরিমাণ ১০০ শতাংশ করা হবে’, কেন্দ্রের বিবৃতিতে খুশি সাংসদ পার্থ
এবার কলকাতা–সহ জেলার পুলিশ কর্তারা এই স্লোগান তুলতে শুরু করেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার পর এভাবেই স্লোগান তুলে পুলিশকে চাপে রাখতে চেষ্টা করে আন্দোলনকারীরা। এবার পুলিশ পাল্টা স্লোগান তুলে উলটো চাপ তৈরি করল আন্দোলকারীদের উদ্দেশে। তবে এই আন্দোলনকারীরা আরজি কর হাসপাতালে যাঁরা আন্দোলন করছেন তাঁদের উদ্দেশে নয়। বরং যাঁরা রাজপথে নেমে এই স্লোগান দিয়েছিলেন তাঁদের বিরুদ্ধে।
মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের এক অফিসার সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায় চাঁচাছোলা ভাষায় সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘হ্যাঁ আমিই সেই পুলিশ। যাকে তোমরা নানা গালগল্পে ভাঁড়, মাতাল, চরিত্রহীন বলে দাগিয়ে দাও। আবার প্রয়োজনে চুপি চুপি এসে বলো, একটু প্রবলেমে পড়েছি। একটু দেখিস ভাই। পুলিশের মেয়ের ভাবনাটা তার বাবা মায়ের উপরেই ছেড়ে দাও। তার বাবাকে দেখে সে হুমকির মোকাবিলা করতে শিখে ফেলেছে।’ আর এক পুলিশ অফিসার বলেন, ‘আমরাও এই সমাজের মানুষ। আমাদের ঘরেও মেয়ে আছে। কিন্তু নির্দিষ্ট একটি পেশার মানুষদের প্রতি এমন আক্রমণ, হুমকি আর মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। এতে আমাদের পরিবারের উপর ভীষণ মানসিক চাপ পড়ছে।’ কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার হেডকোয়ার্টার মিরাজ খালিদ থেকে কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার(ট্রাফিক) রুপেশ কুমার, ডিআইজি বর্ধমান রেঞ্জ শ্যাম সিং, ডিএসপি ঝাড়গ্রাম পুলিশ পারভেজ সরফরাজ, সকলেই করেছেন একই ফেসবুক পোস্ট।