আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করার ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য–রাজনীতি। এই ঘটনায় টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল গ্রেফতার হয়েছেন সিবিআইয়ের হাতে। আর প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষও গ্রেফতার হয়েছেন। মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। তদন্ত করছে সিবিআই। এই আবহে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এবার নবান্নের সভাঘরে আবার নতুন করে মুখ্যসচিবের সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠক এবার শেষও হয়েছে। এখন তাঁরা নবান্ন থেকে বেরিয়ে আসছেন। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে আলোচনা চলেছে। মুখ্যসচিব, স্বাস্থ্যসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে জুনিয়র ডাক্তাররা আজ, বুধবার নবান্নে গিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যসচিবের সঙ্গে। এখন বড় কোনও খবর বেরিয়ে আসেনি। এই আবহে আরজি কর হাসপাতালের খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় এবার নয়া মোড় দেখা যাচ্ছে। এবার জুনিয়র ডাক্তাররা দাবি জানান, তাঁদের জন্য আলাদা রেস্ট রুম, শৌচালয়, হাসপাতালের বেড সংখ্যা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জানানোর বন্দোবস্ত করতে হবে। জুনিয়র ডাক্তারদের নিয়ে টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে এবং ছাত্র সংসদ নির্বাচন, ছাত্র সংসদে নির্বাচিত প্রতিনিধির অন্তর্ভুক্তি, স্থায়ী নিয়োগ করতে হবে রাজ্য সরকারকে বলে দাবি রাখা হয়। রেসিডেন্স ডাক্তারদের স্বীকৃতি, থ্রেট কালচার বন্ধের দাবিও জানান ডাক্তাররা বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: এবার বাইরের তিন চিকিৎসককে তলব করল সিবিআই! আরজি কর কাণ্ডে নয়া মোড়
অন্যদিকে ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশ কমিশনার, ডিসি নর্থ, স্বাস্থ্য অধিকর্তা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা পদে জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি অনুযায়ী বদল এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরও ওঠেনি কর্মবিরতি। এমন পরিস্থিতিতে বুধবার নবান্নেও স্টেনোগ্রাফার নিয়ে যান জুনিয়র ডাক্তাররা। ওই বৈঠকের কার্যবিবরণী লেখার কাজ করছেন স্টেনোগ্রাফার বলে জানা গিয়েছে। জুনিয়র ডাক্তারদের দুটি দাবি মেনে নিয়েছে রাজ্য। চিকিৎসা পরিষেবার উন্নতি এবং নিরাপত্তা ও প্রতিটি কলেজে ভয়ের রাজনীতি বন্ধের দাবিতে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে সহমত হয়েছে রাজ্য। তবে এই দাবিগুলি কার্যকর করতে কিছুটা সময় চেয়ে নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
এছাড়া এই পরিস্থিতিতে বহু রোগী চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বারবার জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার কথা বলেছেন। সেখানে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর ফের শুনানি রয়েছে। তাই আজকের এই বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। রাত পৌনে ১০টা নাগাদ শেষ হল মুখ্যসচিবদের সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক। তবে এই বৈঠকের পরে আন্দোলনরত ডাক্তারদের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট লিখিত প্রতিশ্রুতি না পাওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি বা স্বাস্থ্যভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না তাঁরা।