আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনার পর রাজ্যের সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা নিয়ে সরব হন জুনিয়র ডাক্তাররা। বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে। আজ, বুধবার আরজি কর হাসপাতাল মামলার শুনানি রয়েছে। সেখানে নানা বিষয় উঠে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে তার আগেই নিরাপত্তা পরিকাঠামো নিয়ে কাজ কতদূর এগিয়েছে তা সর্বোচ্চ আদালতে জানাল রাজ্য সরকার। সুতরাং কথা অনুযায়ী কাজ যে হয়েছে সেটা প্রমাণ করতেই পেশ করা হয়েছে হলফনামা।
তবে মঙ্গলবার সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়োগ, কাজ, প্রশিক্ষণ নিয়ে হলফনামা জমা দেয় রাজ্য সরকার। যা তলব করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। আর তখনই রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে আরও দু’টি হলফনামা জমা দেওয়া হয়েছে। এক, কেন্দ্রীয় রেফার ব্যবস্থা। আর দুই, নিরাপত্তা পরিকাঠামো নিয়ে যে ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই রেফারেল সিস্টেমের দাবি জানিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। একই সঙ্গে নিরাপত্তা নিয়ে সরকারি হাসপাতালগুলিতে কাজ কতদূর এগিয়েছে সেই সব তথ্যই জমা দিয়েছে রাজ্য সরকার। এখন দেখার বিষয়, যে দাবি হলফনামায় করেছে রাজ্য সরকার তার সঙ্গে বাস্তবের কতটা মিল আছে। আর আইনজীবীরা কী বলছেন।
আরও পড়ুন: মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ সুকান্ত মজুমদারের, তপ্ত বাতাবরণ
এই হলফনামায় রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে, রাজ্যের ২৮টি মেডিক্যাল কলেজের নিরাপত্তা পরিকাঠামো–সহ নানারকম কাজে ১২৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ডিউটি রুম গড়ে তোলার কাজ হয়েছে ৫৬ শতাংশ, শৌচাগার তৈরি করার কাজ হয়েছে ৫২ শতাংশ, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে ১০০ শতাংশ, সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ হয়েছে ১০০ শতাংশ, রাজ্যের ২৮টি মেডিক্যাল কলেজে প্যানিক বটন বসানোর কাজ শুরু হয়েছে, ১,০৬৫টি বায়োমেট্রিক অ্যাকসেস কন্ট্রোল ডিভাইসের মধ্যে ৬৫৬টি বসানো হয়েছে। আর এই কাজে ২.২৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার বলে সূত্রের খবর।
রেফারেল স্টিম নিয়ে পাইলট প্রজেক্ট শুরু করা হয়। তারপর গত ১৫ অক্টোবর থেকে ডায়মন্ডহারবার–সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় কেন্দ্রীয় রেফাররেল ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। গোটা বাংলায় এই রেফারেল ব্যবস্থা চালুর জন্য ৩০ অক্টোবর সব মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ এবং এমএসভিপি’র সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। তারপর ৬ নভেম্বর থেকে পর পর ৮টি জেলায় চালু হয়েছে কেন্দ্রীয় রেফারেল ব্যবস্থা। রাজ্যের ২৮টি সরকারি মেডিক্যাল কলেজে অতিরিক্ত ৯,৫১৪ জন নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে। ৯,৫১৪ জন নিরাপত্তারক্ষীর মধ্যে ৫০৪ জন মহিলা নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন বলে সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে রাজ্য সরকার।