আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। তারপরই এই হাসপাতালের দুর্নীতি সামনে এসেছে। এমনকী দুর্নীতির অভিযোগে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্টে হয়েছে শুনানি। এবার নবান্ন থেকে প্রশাসনিক বৈঠক করে নিজের বক্তব্য তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের মানুষ এই একমাসে যে চিকিৎসা পাননি তার তথ্য তলব করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম যে তথ্য পেশ করলেন তাতে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।
আরজি কর হাসপাতালে যে ঘটনা ঘটেছে তার পর একমাস কেটে গিয়েছে। জাস্টিস মেলেনি। ইতিমধ্যেই রাস্তায় উই ওয়ান্ট জাস্টিস স্লোগান তুলে প্রতিবাদ আন্দোলনে নেমে পড়েছেন জুনিয়র ডাক্তার থেকে শুরু করে নাগরিক সমাজ। আজ, সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফিরতে অনুরোধ করছি। সুপ্রিম কোর্টও সেই কথা বলে দিয়েছে। আপনাদের কোনও অভিযোগ থাকলে বা কিছু বলার থাকলে আমার কাছে আসতে পারেন। ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৬ লক্ষ মানুষ স্বাস্থ্য পরিষেবা পায়নি। হার্টের অসুখ, ক্যানসারের মতো রোগের জন্য সাধারণ মানুষ সংখ্যায় সরকারি হাসপাতালে এসে বঞ্চিত হচ্ছেন।’
আরও পড়ুন: ‘আমি নির্যাতিতার পরিবারকে টাকার কথা বলিনি’, নবান্ন থেকে সাফ জানালেন মমতা
আরজি কর হাসপাতাল কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। তারপর সিবিআই তদন্তভার নেওয়ায় তাদের হাতে যায়। সন্দীপ ঘোষ গ্রেফতার হয়েছেন আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে। সেক্ষেত্রে এই ধর্ষণ–খুনে অভিযুক্ত একজনই। এই ঘটনায় রাত দখল থেকে ভোর দখল সবই চলছে। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে কেমন ক্ষতি হয়েছে জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। তখন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারাযণস্বরূপ নিগম তথ্য দেন, ‘৭০০০০০ রুগীকে আউটডোর পরিষেবা দেওয়া যায়নি। ৭০০০০ রুগীকে ইনডোরে ভর্তি করা যায়নি। ৭০০০টি নির্ধারিত সার্জারি বাতিল করা হয়েছে। ১৫০০ জন কার্ডিয়াক রোগীর ক্যাথ ল্যাব সুবিধা দেওয়া যায়নি। আর ২৩ জন রোগী মারা গিয়েছেন।’
আজ সুপ্রিম কোর্টে আন্দোলনরত ডাক্তারদের কাজে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে। আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে কাজে ফিরতে বলেছেন। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘আপনাদের সব দাবিই মেনে নেওয়া হয়েছে। আসুন না, কথা হবে, আলোচনা হবে। আমরা তো কথা বলতে প্রস্তুত। আমি সিবিআইকে বলছি দ্রুত তদন্ত করে বিচার দিন নির্যাতিতাকে। এখন আমাদের হাতে কিছু নেই। সবটাই সিবিআইয়ের হাতে আছে। তাই জুনিয়র ডাক্তারদের বলব আপনারা কাজে ফিরে আসুন। সামনে উৎসব। উৎসবে ফিরে আসুন। মানুষ যেন চিকিৎসার অভাবে মারা না যান।’