আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে গোটা রাজ্যজুড়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। নিরাপত্তার দাবি উঠতে শুরু করেছে সর্বত্র। জুনিয়র ডাক্তার থেকে শুরু করে নাগরিক সমাজ রোজ রাজপথে মিছিল, ধরনা করছেন। আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা ঘটার একমাস পেরিয়ে গিয়েছে। তদন্তভার গিয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। তবে জাস্টিস আসেনি। তাই এবার স্লোগান পাল্টে গেল। উই ওয়ান্ট জাস্টিসের পরিবর্তে আজ, রবিবার রাজপথে স্লোগান উঠল ‘উই ডিমান্ড জাস্টিস’। আর এই স্লোগান উঠল নির্যাতিতার বাবার কণ্ঠে।
এদিকে এবার অঞ্জন মণ্ডল–সহ বেশ কয়েকজন জুনিয়র চিকিৎসক অভিযোগ করেছেন সন্দীপ ঘনিষ্ঠ তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। ওই জুনিয়র চিকিৎসকদের অভিযোগ, অভিযুক্ত তিন ডাক্তার ভয় দেখাচ্ছিলেন তাঁদের। এই মর্মেই বউবাজার থানা এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। আজ নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, দ্রুত আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ–খুনের বিচার চাই। তাই তো নিহত চিকিৎসকের মা বলেন, ‘আমরা আর উই ওয়ান্ট জাস্টিস বলব না। বিচার চাই নয়, বিচার করতে হবে এটাই আমাদের দাবি। তাই বলুন, উই ডিমান্ড জাস্টিস। যতদিন না আমার মেয়ে বিচার পাচ্ছে আপনারা রাস্তা ছাড়বেন না।’
আরও পড়ুন: তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এফআইআর বউবাজার থানায়, সন্দীপ ঘনিষ্ঠরা বেকায়দায়
অন্যদিকে আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের দিন বিরুপাক্ষ বিশ্বাস ও অভীক দে সেমিনার হলে ছিলেন। ওই দিনের একটি ছবি ভাইরাল হয়েছিল। যদিও ওই ছবির সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ডিজিটাল। আজ ধরনা মঞ্চে নিহত চিকিৎসকের মায়ের পাশাপাশি বাবাও ছিলেন। তিনি এদিন অভিযোগ করেন, ‘খুনের ঘটনার তথ্য ও প্রমাণ লোপাট করা হয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসন আমাদের সঙ্গে অসহযোগিতা করেছে। উই ডিমান্ড জাস্টিস। একটাই দাবি আমাদের, বিচার চাই। এবার সুপ্রিম কোর্টের পরীক্ষা। আমরা আশাহত হয়ে যাচ্ছি। আমাদের আশা পূরণ করতে পারে সর্বোচ্চ আদালতই।’
আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে আজ চিঠি দিয়েছেন বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তদন্ত করার দাবি করেছেন তিনি। আজ নির্যাতিতার বাবার বক্তব্য, ‘মেয়ের সঙ্গে যে জঘন্য অপরাধ হয়েছে, তার যে সম্মিলিত প্রতিবাদ হচ্ছে, তাতে আমি সাহস পেয়েছি। সবাইকে বলতে চাই, আমার সঙ্গে থাকুন। বিচার সহজে পাব না। বিচার আমাদের ছিনিয়ে নিয়ে আসতে হবে। আশা করি, সবাই আমাকে সহযোগিতা করবেন। আপনারাই আমার সাহস।’ আর মায়ের কথায়, ‘ছোট থেকেই ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন ছিল। মেয়ে বলত আমি ডাক্তার হব মা। কিন্তু আরজি কর হাসপাতালে বলিদান করল আমার মেয়ে। নৃশংস, অত্যাচারিত হয়ে হয়তো মেয়েটা ‘মা’ বলে চিৎকার করেছে। এখনও কানে মেয়ের ‘মা’ ডাক শুনি’। কান্নায় ভেঙে পড়লেন মা–বাবা।