আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। তার জেরে জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলনে নেমেছেন। বিচারের দাবি তুলেছেন। স্লোগান উঠেছে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। স্বাস্থ্য ভবনের সামনে সেই বিক্ষোভ আন্দোলনে আজ, শনিবার অচলাবস্থা কাটাতে জুনিয়র ডাক্তারদের ধরনা মঞ্চে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানে দাঁড়িয়েই ‘দিদি’ হিসাবে জুনিয়র ডাক্তারদের পরামর্শ দেন, বাইরে থেকে আসা সব খাবার না খাওয়ার। জুনিয়র ডাক্তারদের উপর হামলা করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ। অডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হতেই আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। তারপরই দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সতর্কবার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
স্বাস্থ্যভবনের সামনে ১৪টি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। যাতে জুনিয়র ডাক্তারদের উপর হামলা নেমে না আসে। এখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘যে কেউ যখন তখন কিছু খাবার দিলে সব খাবেন না। যে যা খাবার দিচ্ছে সব খাবার খাবেন না।’ খাবারের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে দিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের ক্ষতি করতে পারে কেউ বা কারা এমন আশঙ্কা থেকেই এই মন্তব্য করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা শুনে সত্যিই সতর্ক হতে শুরু করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। বৃহস্পতিবার খাবার চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেদন করেছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁরা জানিয়েছিলেন, শুকনো খাবার এবং পর্যাপ্ত জলের জোগান থাকলেও দুপুর বা রাতের খাবারের ঘাটতি রয়েছে তাঁদের। তখনই অনেকে খাবার নিয়ে হাজির হন এই ধরনা মঞ্চে।
আরও পড়ুন: তাজমহলের প্রধান গম্বুজ ফুটো হয়ে জল পড়ছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিয়ো ভাইরাল
আজ, শনিবার স্বাস্থ্য ভবনে পৌঁছে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলে অচলাবস্থা কাটানোই লক্ষ্য। তখনই খাবারের কথা তুলে ধরেন তিনি। সতর্ক করে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার মধ্যে কুণাল ঘোষ দাবি করেন, ‘খাবারের সঙ্গে কে কী দিয়ে দেবে তার দায় কে নেবে। ওখানে এক একটা রাজনৈতিক দলের কেউ কেউ গিয়ে নানারকমের খাবার দিচ্ছেন। কে সেগুলির পরীক্ষা–নিরীক্ষা করবে? যা হবে, তা তো এখন রাজ্য সরকারের দায়। ফলে চূড়ান্ত সতর্কতার ব্যবস্থা করা হোক। গোটা এলাকায় বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হোক।’
পাঁচ দফা দাবিতে স্বাস্থ্যভবনের সামনে আন্দোলন করে চলেছে জুনিয়র ডাক্তাররা। ওই দাবিগুলি নিয়ে আজ শনিবার রাতে সকলকে পথে নামার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। তবে তার আগেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ধরনাস্থলে পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, ‘আমি আপনাদের আন্দোলনকে কুর্নিশ করছি। কিন্তু গতকাল রাতে যেভাবে ঝড়জলের মধ্যে এখানে বসে ছিলেন আপনারা সেটা দেখে আমার কষ্ট হয়েছে। আপনাদের কষ্ট দেখে রাতে ঘুম হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী নয়, আপনাদের দিদি হয়ে এখানে এসেছি। আপনারা আমার উপর ভরসা রেখে কাজে ফিরুন। আপনারা নিজেরা আলোচনা করে কাজে ফেরার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিন। আর একটা কথা। যে কেউ খাবার দিলে, সব খাবার কিন্তু খাবেন না।’