আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। তা নিয়ে এই বাংলা উত্তাল হয়েছে। রাজপথে নেমেছে মানুষ। জুনিয়র ডাক্তাররা লাগাতার আন্দোলন করে চলেছেন। ইতিমধ্যেই তার জেরে ২৪ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে বিনা চিকিৎসায় বলে অভিযোগ। এই আবহে বুধবার মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে ডেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে যে, কোনও রোগীকে ফেরাতে পারবে না তারা। এমনকী স্বাস্থ্যসাথী কার্ডও ফিরিয়ে কোনও মানুষকে স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।
কলকাতায় আরজি কর হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের দড়ি টানাটানি এখনও চলছে। সেটা আজ অথবা কাল মিটে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তার মধ্যে বারবার স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। সুপ্রিম কোর্টেও সে কথা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। দ্রুত বেসরকারি হাসপাতালের কর্তাদের সঙ্গে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী হতে পারে। এদিন নবান্নে শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠক ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এই বৈঠক শেষের পর মুখ্যসচিব ও রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে ডেকে নেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে কী নির্দেশ দিতে হবে সেটা জানিয়ে দেন বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: বাংলায় প্রথম ই–বর্জ্য প্লান্ট চালু হতে চলেছে, সোনারপুরেই আগামী বছর গড়ে উঠবে
ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, সমস্ত মেডিক্যাল কলেজে অধ্যক্ষই হবে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান। তার সঙ্গে থাকবেন নার্স, জুনিয়র ডাক্তার এবং স্থানীয় থানার পুলিশ। রাজনীতি বাদ রাখতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার প্রেক্ষিতে কদিন আগে টালা থানার ওসিকে ৪টি বেসরকারি হাসপাতাল ফিরিয়ে দেয়। তারপর টালা থানার ওসির নাম মুখে না নিলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক বৈঠকে বলেন, ‘একজন পুলিশ অফিসারকে চারটি বেসরকারি হাসপাতাল ফিরিয়ে দেয় কেমন করে? এত সাহস পায় কোথা থেকে?’ তারপরই এবার কড়া নির্দেশ দিতে বলা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
এই বিষয়টি বাস্তবে ঘটলে অচলাবস্থার সময় সাধারণ গরিব মানুষ পরিষেবা পাবেন। এই পরিস্থিতিতে বেসরকারি হাসপাতাগুলি সম্পর্কে স্বাস্থ্য ভবন একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে। এই রিপোর্ট তুলে ধরা হবে বেসরকারি হাসপাতালগুলির কর্তাদের সামনে। যেদিন বৈঠক থাকবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। দু’একদিনের মধ্যে স্বাস্থ্য ভবনের রিপোর্ট পৌঁছে যাবে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে বলে সূত্রের খবর। তারপরই হবে বৈঠক। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা দেওয়ার প্রক্রিয়ার উন্নতিই হয়েছিল। কিন্তু এই কদিন কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল বেগতিক ভূমিকা নিয়েছে বলে অভিযোগ। তাদের সতর্ক হতে বলছে রাজ্য সরকার।