আজ, মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের যে তাপমাত্রা তোলা হয়েছিল বাস্তবে তার পারদ পতন দেখা গেল। পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের মিছিল শান্তিপূর্ণ ছিল না। ব্যারিকেড ভাঙা থেকে শুরু করে ইট ছোড়া, পুলিশের উপর হামলা নামিয়ে আনার অভিযোগ উঠেছে। পাল্টা পুলিশ লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাসের শেল এবং জলকামান প্রয়োগ করে মিছিলের আক্রমণ রুখে দেয়। এই মিছিলকে কেন্দ্র করে নবান্নের আশেপাশে পুলিশের নজরদারি নিশ্ছিদ্র করা হয়েছিল। তার সঙ্গে এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়ির সামনেও বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হল। এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনের রাস্তা হাজরা রোড সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হল কালীঘাট সেতুও।
আজ পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের ব্যানারে হওয়া নবান্ন অভিযানে কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতি ছিল। শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ হস্তক্ষেপ করতে পারে না বলেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু মিছিল তো শান্তিপূর্ণ হল না। সুতরাং কলকাতা হাইকোর্ট প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল। কারণ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই মিছিলে অনুমতি না দেওয়ার আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে সাড়া দেয়নি আদালত। আর তারপরই আজ এমন পরিস্থিতি তৈরি হল। এই মিছিল যে অরাজনৈতিক ছিল না সেটা বোঝা গেল অর্জুন সিং এবং কৌস্তভ বাগচীকে রাস্তায় নামতে দেখে। এঁরা দু’জনেই বিজেপি নেতা। টানটান নিরাপত্তাও ছিল শহরজুড়ে।
আরও পড়ুন: ‘দেশে ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত করার হার মাত্র ২৬ শতাংশ’, আবার সরব হলেন অভিষেক
এই মিছিল থেকে গোলমাল পাকানোর একটা ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ খুব ঠাণ্ডা মাথায় পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছে। কলকাতা–হাওড়া চত্বরে পুলিশের ব্যবস্থা ছিল চোখে পড়ার মতো। নবান্ন ও সংলগ্ন এলাকায় শুরু থেকেই ছিল কড়া নজরদারি। দ্বিতীয় হুগলি সেতু থেকে নবান্ন আসার পথেই পুলিশ দেখতে থাকে সচিত্র পরিচয়পত্র। নবান্ন ঢুকতে গেলে আজ, মঙ্গলবার দেখাতে হচ্ছে আই কার্ড। নবান্নের সামনে এবং নবান্ন সংলগ্ন এলাকায় পুলিশের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় ছিল। এমনকী মোতায়েন রয়েছে র্যাফ এবং কমব্যাট ফোর্স। হাওড়ার বেশ কিছু রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণ পর্যন্ত করা হয়েছে।
লালবাজার সূত্রে খবর, সোমবার রাত ৮টা থেকে শালিমার, খিদিরপুর, এফসিআই–সহ জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব লরি নো–এন্ট্রি করে দেওয়া হয়। আন্দুল রোডের আলমপুর, কোনা রোডের নিবড়া থেকে গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে নিবেদিতা সেতুর দিকে। এই আবহে মিছিল ঘুরে আসতে পারে কালীঘাটের দিকে বলে খবর পায় পুলিশ। ওখানে তো মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি। সেখানে আছড়ে পড়তে পারে হিংসার ঢেউ। তাই গোটা কালীঘাট চত্বর মুড়ে ফেলা হয়েছে। প্রত্যেকটি অলিগলিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের রাস্তায় প্রচুর পরিমাণে পুলিশ মোতায়েন করা রয়েছে। সুতরাং কোনও ফাঁক গলে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছে পৌঁছনো সম্ভব নয়। আজ সকালেই নবান্নে চলে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।