আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার তদন্তভার কলকাতা পুলিশের হাত থেকে গিয়েছে সিবিআইয়ের কাছে। আজ, বুধবার থেকে তদন্তে নেমেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তভার হাতে নিয়েই আজ সিজিও কমপ্লেক্সে বৈঠক হয় স্পেশ্যাল ক্রাইম ব্রাঞ্চের। এই বৈঠকে ছিলেন স্পেশ্যাল ক্রাইম ব্রাঞ্চের ডিআইজি। খুনের মোটিভ খুঁজে বের করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা থেকে শুরু করে কার গাফিলতি ছিল সেটাও খুঁজে দেখছেন সিবিআই অফিসাররা।
এদিকে আরজি কর হাসপাতাল কাণ্ডে ৬টি বিষয়ের উপর ফোকাস করেছে সিবিআই। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি সূত্রে খবর, এই ৬টি বিষয়ের উপর তদন্ত করেই আসল তথ্য বের করতে চাইছেন সিবিআই গোয়েন্দারা। এই ৬টি বিষয় হল—এক, তরুণী চিকিৎসক একজনের দ্বারা নাকি একাধিকজনের দ্বারা ধর্ষিতা হয়েছেন। দুই, অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় কি সিভিক ভলান্টিয়ার ছিল তখনও। তিন, এই ঘটনার পর প্রমাণ লোপাট করা হয়েছে কিনা। চার, কেন খুনকে প্রথমে আত্মহত্যা বলা হয়েছিল। পাঁচ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কি এই ঘটনায় জড়িত এবং ছয়, চিকিৎসকের খুনের পর সকালে কেন পুলিশকে খবর দেওয়া হল? এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: অনাস্থা পূর্ব মেদিনীপুরে আস্থা বীরভূমে, রাজ্যের নয়া কারামন্ত্রী হলেন চন্দ্রনাথ সিনহা
অন্যদিকে এই ঘটনার পর কলকাতায় এখন রয়েছে বড় চিকিৎসকদের এবং ফরেনসিক টিম। আগে থেকেই কি নির্যাতিতাকে টার্গেট করেছিল অভিযুক্ত? তাঁর উপর কি নজর রাখা হয়েছিল? অভিযুক্ত কি আগেই হাসপাতালে ঢুকেছিল? এই দিকগুলির ক্ষেত্রেও বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এগুলির সঙ্গে ফিঙ্গার প্রিন্ট, ফুট প্রিন্ট যা মিলেছে তার সঙ্গে অভিযুক্তের কতটা মিল রয়েছে সেটাও এখন দেখা হচ্ছে। সিবিআই অফিসাররা মোবাইল ফোনের লোকেশনও ট্র্যাক করছে। যাতে সঞ্জয় রায় ছাড়া আর কারা ছিল সেটা বোঝা যায়। পুলিশের কাছে থাকা তথ্য এবং সঞ্জয়ের বয়ান খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এছাড়া কলকাতা পুলিশ যতটুকু তথ্য জোগাড় করতে পেরেছিল ততটুকুই দিতে পেরেছে সিবিআইকে। কারণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, রবিবারের মধ্যে যদি এই ঘটনার কিনারা করতে না পারে কলকাতা পুলিশ তাহলে মামলা সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেবো। কিন্তু রবিবার গড়ানোর অনেক আগেই কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআইকে তদন্তভার দিয়ে দেয়। ফলে তদন্ত করার সুযোগই পায়নি কলকাতা পুলিশ। আজ কলকাতা পুলিশ মেডিক্যাল পরীক্ষা করিয়ে অভিযুক্তকে সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছে দেয়। কলকাতা পুলিশের সিটের সদস্যরা সিজিওতে পৌঁছে যাবতীয় নথি তুলে দেয়। সিবিআই অফিসারদের কেস ডায়েরির যাবতীয় তথ্য বুঝিয়ে দেন।