আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। তারপর থেকে জুনিয়র ডাক্তাররা লাগাতার কর্মবিরতি এবং এখন আমরণ অনশন করছেন। মাঝে দেখা যায়, দ্রোহের কার্নিভাল। কিন্তু জুনিয়র ডাক্তাররা যতই আন্দোলন করুন না কেন এখন তাঁদের নানা কার্যকলাপ নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। স্বেচ্ছাসেবি সংস্থা খুলে টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। আবার তাঁরাই রাজ্য সরকারকে চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। ধর্মঘট করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। আর তার মধ্যেই বামপন্থী চিকিৎসক নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় ফেসবুকে ঝড় তুলেছেন। যা নিয়ে এখন বেশ চাপে আছেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার প্রতিবাদে শুরু থেকেই পথে নেমেছেন বামপন্থী চিকিৎসক নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাঁকেই দেখা গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষের সঙ্গে বৈঠক করতে। আর শুক্রবার এই বৈঠক নিয়েই ফেসবুকে একটি বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পোস্ট করা ভিডিয়োতে দাবি করা হয়েছে, ‘অনেকেই জুনিয়র ডাক্তারদের বোড়ে হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছেন।’ তারপরই কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়ে চিকিৎসক উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কেউ ওনাকে দূত হিসেবে নিয়োগ করিনি। কুণাল ইস্যুতে আমরা একেবারেই তাঁকে সমর্থন করছি না।’ এই মন্তব্যের পরেই আবার ফেসবুকে নতুন করে তাৎপর্যপূর্ণ পোস্ট করেন চিকিৎসক নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোর সময় রেকর্ড ভিড় হয়েছে লোকাল ট্রেনে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করল দুরপাল্লার ট্রেন
চিকিৎসক নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুক পোস্ট থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট তিনি এবার সরে আসছেন। এদিন সন্ধ্যায় নারায়ণবাবু ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘আমার আসল শক্তি রোগীরা। ডাক্তারি করা আমার আবেগ। সেটাই করা যাক আরও মন দিয়ে। সময় সব কিছু চেনায়।’ আর কুণাল ঘোষের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে যখন রাজ্য–রাজনীতি সরগরম তখন চিকিৎসক নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘অনেকেই জুনিয়র ডাক্তারদের বোড়ে হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছেন। অচলাবস্থা কাটানোর উপায় খুঁজতেই এই বৈঠক। কোর্টের মাধ্যমে সমাধান সময়সাপেক্ষ। জট কাটাতে আলোচনাই একমাত্র পথ। স্বাস্থ্য দফতরের সর্বোচ্চ স্তরে বার্তা পৌঁছে দেওয়াই লক্ষ্য। এমন কিছু করবেন না যাতে আন্দোলনের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়।’
এই ফেসবুক পোস্ট নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তবে তিনি যে জুনিয়র ডাক্তারদের বার্তা দিতে চেয়েছেন সেটা বোঝা গিয়েছে। আর তাই চিকিৎসক উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘আমাদের বক্তব্য খুব পরিস্কার। উনি কোনও চিকিৎসক সংগঠনের সদস্য কিনা, আমরা জানি না। ব্যক্তিগত এক্তিয়ারে উনি যেতেই পারেন। কিন্তু আমরা জুনিয়র বা সিনিয়র চিকিৎসকরা এখন যে আন্দোলন করে চলেছে, তার সঙ্গে যে বিরাট জনসমষ্টি আছে, তারা কেউ ওনাকে দূত হিসেবে নিয়োগ করিনি। তিনি এমন একজনের সঙ্গে দেখা করছেন, যিনি আন্দোলনকারীদের কদর্য ভাষায় আক্রমণ করছেন। তাই আমরা মনে করি, তাঁর এই আন্দোলন নিয়ে কথা বলতে যাওয়া অবাঞ্চিত। এটা আমরা সমর্থন করছি না।’