আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। তারপর থেকে জুনিয়র ডাক্তাররা লাগাতার কর্মবিরতি এবং এখন আমরণ অনশন করছেন। মাঝে দেখা যায়, দ্রোহের কার্নিভাল। কিন্তু জুনিয়র ডাক্তাররা আমরণ অনশন করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এই আবহে আজ জুনিয়র ডাক্তারদের ধরনা মঞ্চে যান মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিব। তারপরই সোমবার জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠকে ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও আগে অনশন তুলতে হবে তবেই বৈঠক সম্ভব। এই বিষয়টি নিয়ে ইমেল পাওয়ার পর বৈঠকে বসেন জুনিয়র ডাক্তাররা। আর তাতে তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এখনই তোলা হবে না অনশন।
এদিকে শনিবার দুপুরে ‘ন্যায়বিচার যাত্রা’ শুরু হয়েছে। সোদপুর থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত ‘ন্যায়বিচার যাত্রা’র মিছিল করা হয়। তারপরই মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ইমেল করেন জুনিয়র ডাক্তারদের। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যে ১০টি দাবি নিয়ে কথা হয়েছে তার উল্লেখ করা হয়। আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনশন তুলে নিতে অনুরোধ করেছেন বলেও লিখেছেন মুখ্যসচিব। আগে তা তুলতে হবে। তারপরে বৈঠক। কিন্তু জুনিয়র ডাক্তাররা সিদ্ধান্ত নিয়ে জানিয়ে দেন, ‘আগে ১০টি দাবি মানতে হবে। তারপরই তোলা হবে অনশন। দাবি না মানার আগে অনশন তোলা হবে না।’
আরও পড়ুন: ‘এটায় শুভ ইঙ্গিত দেখতে পাচ্ছি’, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগের প্রশংসায় নির্যাতিতার বাবা–মা
অন্যদিকে আজ টেলিফোনে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয় জুনিয়র ডাক্তারদের। তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিকিৎসকদের বলেন, ‘পায়ে ধরে অনুরোধ করছি। অনশন তুলুন। আমি দিদি হিসেবে বলছি। আন্দোলন থেকে সরে এসো। কাজে যোগ দাও। আমি মানবিকতার পক্ষে। আমিও জাস্টিস চাই। কিন্তু হাসপাতালে যদি সাধারণ মানুষ পরিষেবা না পান তাঁরা কোথায় যাবেন?’ এই বিষয়ে মুখ্যসচিবের মেলের পর এক জুনিয়র ডাক্তার বলেন, ‘আমরা অনশন করতে চাই না। আলোচনার মাধ্যমেই সুষ্ঠু সমাধান বেরিয়ে আসা সম্ভব। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সকালে অনশনকারীদের কথা হয়েছে। তার পর ইমেল পাঠিয়েছেন মুখ্যসচিব। আমরাও পাল্টা ইমেল পাঠাতে চলেছি। এখনই তাই অনশন তুলতে পারছি না।’
এছাড়া নানা কথা হয় জুনিয়র ডাক্তার এবং মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে। এই আবহে ইমেল মারফত ১০ দফা দাবি জানিয়ে তার ব্যবস্থা নেওয়ার উল্লেখ করেছেন মুখ্যসচিব। গোটা বিষয়টি নিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, ‘এই আলোচনা ৫ মিনিটেই শেষ হয়ে যেতে পারে। যদি দাবিগুলি মেনে নেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে ৪৫ মিনিট লাগবে না। আমরাও অনশন তুলে নেব। কাজে ফিরে যাব। আগেও ভিডিয়ো কনফারেন্সিং, লাইভ স্ট্রিমিং ছাড়া আমাদের বৈঠকে বসতে বাধ্য করা হয়েছিল। এবার আমরা ডাক পেয়েছি। আবার বৈঠকে বসব। সময় মতোই যাব। আমরা আশাবাদী।’