আরজি কর কাণ্ডে গতকালই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক হয় জুনিয়র ডাক্তারদের। এদিকে আজ আবার সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি আছে। তারই মাঝে আরজি কর দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে সকাল সকাল ৬ জায়গায় তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে ইডি। রিপোর্ট অনুযায়ী, আজ সকালেই তৃণমূল বিধায়ক তথা আরজি করের রোগী কল্যাণ সমিতির প্রাক্তন সভাপতি ডঃ সুদীপ্ত রায়ের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। জানা গিয়েছে, সকাল থেকেই তৃণমূলের চিকিৎসক নেতা সুদীপ্ত রায়ের উত্তর কলকাতার বাড়ি ও নার্সিংহোমে তল্লাশি চলছে। এছাড়াও বালিগঞ্জে এক ওষুধ ব্যবসায়ীর বাড়িতে পৌঁছেছে ইডি। সেই ব্যবসায়ীর নাম সন্দীপ জৈন। দাবি করা হচ্ছে, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে মেডিক্যালের চিকিৎসা সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ করত তাঁর সংস্থা শ্রী ইয়স ট্রেডিং কোম্পানি। (আরও পড়ুন: 'সমঝোতা হয়েছে', মমতা-ডাক্তারদের বৈঠক নিয়ে গভীর রাতে বড় দাবি ঘিরে তোলপাড়)
আরও পড়ুন: 'আরজি করে খুনের মামলায় ধামাচাপা দেওয়ার কথা মেনেছেন মমতা',সামনে বিস্ফোরক মন্তব্য
আরও পড়ুন: আরজি করে চিকিৎসক খুন কাণ্ডে নয়া মোড়, 'আমি খুশি', পোস্ট 'বিদ্রোহী' তৃণমূল সাংসদের
প্রসঙ্গত, আখতার আলির অভিযোগের ভিত্তিতে আরজি কর দুর্নীতি নিয়ে মামলা হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। সেই মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের কাঁধে চাপিয়েছিল উচ্চ আদালত। তবে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে ইডিও তদন্তে নেমেছে। এদিকে এই দুর্নীতি মামলায় আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তাঁকে দফায় দফায় জেরা করছে সিবিআই। এমনী সুদীপ্ত রায়ের বাড়িতেও হানা দিয়েছিল সিবিআই। তৃণমূল বিধায়ককে দীর্ঘক্ষণ জেরা করেছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা। আর আজ সুদীপ্ত রায়ের বাড়িতে পৌঁছে যায় ইডি। এদিকে সুদীপ্তর সিঁথির বাড়ির পাশাপাশি হুগলির দাদপুরের দাঁড়পুর গ্রামে সুদীপ্ত রায়ের বাংলোতেও ইডি অভিযান চালাচ্ছে বে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: 'বিনীত যেখানে কাজ করতে চেয়েছেন…', CP-কে নিয়ে মমতার মন্তব্য ঘিরে বিস্ফোরক অভিযোগ
রিপোর্ট অনুযায়ী, আজ সকাল ৬টা ৪৫ নাগাদ ইডির একটি টিম সুদীপ্ত রায়ের সিঁথির মোড়ের বাড়ি ও নার্সিংহোমে এসে পৌঁছয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিধায়কের বাড়ি ও বাড়ি লাগোয়া তাঁর মালিকানাধীন একটি নার্সিং হোমে অভিযান চালিয়েছিলেন সিবিআই আধিকারিকেরা। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলেছিল তল্লাশি। সিবিআই তদন্ত শেষে সুদীপ্ত দাবি করেছিলেন, তিনি তদন্তকারী আধিকারিকদের সবরকম ভাবে সহযোগিতা করেছেন এবং ভবিষ্যতেও সহযোগিতা জারি রাখবেন। এদিকে উত্তরবঙ্গ লবির দুই নেতা অভীক ও বিরূপাক্ষ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে সাংবাদিকদের সুদীপ্তাবু বলেছিলেন, 'অভীক-বিরূপাক্ষ সম্পর্কে আমি কিছু বলব না। আমি জানি না ওঁরা স্পটে গিয়েছিল কিনা। আমি জানি না এই বিষয়ে। এদিকে আরজি কর তাঁর মনে বিশেষ স্থান অর্জন করে আছে বলে দাবি করেন সুদীপ্ত রায়। তিনি বলেন, 'আমাকে যখন এই ঘটনা জানানো হয় তখন সেটা শুনে স্তম্ভিত হয়ে যায়। কারণ ওই হাপাতালের সঙ্গে আমার একটা দুর্বলতা আছে। ওই হাসপাতালে আমি কাজ করেছি , আমার বাবা ওখানে পড়াতেন।' এদিকে ঘটনার দিন সকালে ফোনে কথা সন্দীপের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল বলে মেনে নিয়েছেন সুদীপ্ত রায়।
এদিকে এর আগে সুদীপ্ত রায়ের বিরুদ্ধে শুভেন্দু অভিযোগ করেছিলেন যে আরজি কর থেকে নতুন মেশিন আনিয়ে নিজের নার্সিং হোমে বসাচ্ছেন তৃণমূল বিধায়ক। এই অভিযোগ প্রসঙ্গে চিকিৎসক-রাজনীতিবিদ বলেছিলেন, 'আমার নার্সিং হোমে বেনিয়ম বা দুর্নীতির কোনও প্রশ্নই নেই। ১৯৮৪ সালে আমি নার্সিংহোম তৈরি করি। বাম আমলে তিলে তিলে এটাকে দাঁড় করিয়েছি। যে কেউ আমার নার্সিংহোমে গিয়ে যাচাই করতে পারেন, আমি এমন কিছু কাজ করেছি কি না।'