সুপ্রিম কোর্টে দাঁড়িয়ে সিবিআই মিথ্যে বলেছে। এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা-মা। তাঁরা অভিযোগ করেছেন, সিবিআই মোটেও তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে না। তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে অনেক কিছুই জানতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতে শুনানির সময় অবশ্য সিবিআইয়ের তরফে দাবি করা হয় যে নির্যাতিতা চিকিৎসকের পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
পরিবারের আইনজীবী আদালতে কোনও আপত্তি জানাননি
যদিও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চের সামনে যখন সিবিআইয়ের আইনজীবী তথা সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা যখন সেই কথাটা বলেন, তখন তা নিয়ে কোনও আপত্তি জানাননি নির্যাতিতা চিকিৎসকের আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার। পরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে উষ্মাপ্রকাশ করেন নির্যাতিতার বাবা-মা। অসন্তোষ প্রকাশ করেন সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে।
‘আদালতে দাঁড়িয়ে এভাবে যে মিথ্যে বলা যায়, জানতাম না’
নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা দাবি করেছেন, তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখে না সিবিআই। সুপ্রিম কোর্টে দাঁড়িয়ে যে এরকমভাবে মিথ্যে বলা যায়, তা তাঁরা জানতেন না। সিবিআই আশ্বাস দিয়েছিল যে নিম্ন আদালতে চার্জশিট পেশের সময় তাঁদের জানানো হবে। সেটা করা হয়নি। তাঁদের না জানিয়েই আরজি কর মামলায় চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই। সেই বিষয়ে তাঁদের কিছু জানানো হয়নি। সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট কবে পেশ করবে সিবিআই, সে বিষয়েও তাঁদের কিছু জানানো হয়নি বলে দাবি করেছেন নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা।
সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন নির্যাতিতা চিকিৎসকের মা'ও। হতাশার সুরে তিনি জানিয়েছেন, সেই অভিশপ্ত রাতের পরে চার মাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও জানতে পারলেন না যে তাঁর থেকে মেয়েকে কেন কেড়ে নেওয়া হয়েছে? কেন তাঁর মেয়েকে খুন করা হয়েছে?
CBI-র উপরে এখনও আস্থা রেখেছেন বাবা-মা
সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এবং মেয়েকে 'বিচার' এনে দিতে সিবিআইয়ের তদন্ত প্রক্রিয়ার উপরে অবশ্য এখনও আস্থা রেখেছেন নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা-মা। হারাচ্ছেন না ভরসা। তাঁরা জানিয়েছেন, এখন তাঁদের জীবনের একটাই উদ্দেশ্য, সেটা হল মেয়েকে ন্যায়বিচার পাইয়ে দেওয়া। যে বা যাদের কারণে তাঁদের থেকে মেয়েকে কেড়ে নেওয়া হল, তারা যাতে শাস্তি পায়, সেটার প্রহর গুনছেন বলে দাবি করেছেন নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা-মা।
আরও পড়ুন: Kunal Ghosh:'নিজেদের আখের গোছানো শয়তানগুলোকে চিনে রাখুন' কী হল? ফের বেলাগাম কুণাল
তারইমধ্যে সিবিআইয়ের পেশ করা রিপোর্টের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, মাসখানেকের মধ্যে শিয়ালদা আদালতে আরজি কর মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। মোট ৫২ জন সাক্ষী আছেন। ইতিমধ্যে ৪৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়ে গিয়েছে।