আরজি করে চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় উত্তাল হয়েছিল গোটা রাজ্য। এমনকী দুর্গাপুজোর সময়তেও এই ইস্যুতে আন্দোলন প্রতিবাদ হয়েছিল রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। ধর্মতলায় অনশনে বসেছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এই আন্দোলনের জেরে নাগরিক সমাজ রাস্তায় নেমেছিলেন। তখন গোটা রাজ্যে 'সরকার বিরোধী' হাওয়া বয়ে গিয়েছিল বলে মনে করেছিলেন অনেকেই। তবে এত কিছুর মাঝেও বাংলার ৬ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে আরজি করের কোনও প্রভাবই পড়েনি। বরং বাংলার সেই ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের সবকটিতেই জয়ী হয়েছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। এই আবহে এবার একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে ‘জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট’-এর তরফে। (আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে হিন্দুদের ওপর হামলা, গর্জে উঠলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা)
আরও পড়ুন: 'আশা করি কেন্দ্র-রাজ্য…', মণিপুর হিংসা নিয়ে মুখ খুললেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক
উপনির্বাচন নিয়ে জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের তরফ থেকে বলা হয়েছে, 'কয়েকদিন আগে পশ্চিমবঙ্গে ছ’টি আসনে উপনির্বাচন হল। এবং সেই আসনগুলিতে শাসকদল জিতেছে বলে এক প্রকার ভাবে আমাদের নাগরিক আন্দোলনকে ব্যঙ্গাত্মক ভাবে আক্রমণ হল। বলা হল, ‘কী হল এত আন্দোলন করে, সেই তো শাসকদল জিতেই গেল!’ বার বার এই ভাবে আন্দোলনকে দলীয় রাজনীতির মাপকাঠিতে ফেলে দেওয়ার কদর্য প্রয়াসকে তীব্র নিন্দা আমরা আগেও জানিয়েছি, এখনও জানাচ্ছি। আমাদের আন্দোলন স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বদল, দুর্নীতি-হুমকি প্রথার বিরুদ্ধে। রাজনীতির সমীকরণকে এর সঙ্গে টেনে এনে আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করা চেষ্টা হচ্ছে।'
এদিকে আগামী শুক্রবার স্বাস্থ্যভবন পর্যন্ত একটি মিছিলেরও ডাক দিয়েছে জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট। আরজি কর কাণ্ডে গ্রেফতার সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে সিবিআই চার্জশিটের জন্যে ছাড়পত্র দেয়নি রাজ্য সরকার। এছাড়াও থ্রেট কালচারে অভিযুক্ত অভীক দে-র বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি এতদিনেও। এই দুই ইস্যুতে প্রতিবাদ জানাতেই শুক্রবারের মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে জুনিয়র ডাক্তাদের তরফ থেকে। জানানো হয়েছে, ৬ ডিসেম্বর, শুক্রবার দুপুর ৩টেয় ওয়েস্টবেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলের সামনে জমায়েত করা হবে। তার পর সেখান থেকে মিছিল করে যাওয়া হবে স্বাস্থ্যভবন পর্যন্ত। এই মিছিলে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মীরা থাকবেন। এছাড়াও সাধারণ মানুষকেও এই মিছিলে সামিল হওয়ার জন্যে আহ্বান জানানো হয়েছে। এর আগে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। কর্মবিরতিতে গিয়ে সরকারকে চাপে রেখেছিলেন অনিকেত, দেবাশিসরা। এদিকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি এই ইস্যুতে সরকারকে ক্রমাগত আক্রমণ শানিয়ে গিয়েছে। তবে ডাক্তারদের আন্দোলনে সরাসরি তারা কেউ ঢুকতে পারেনি। এমনকী বিজেপি এবং কংগ্রেস নেতারা ডাক্তারদের আন্দোলনস্থলে গেলে 'গো ব্যাক' স্লোগান শুনতে হয়। আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধে আবার অতিবাম হওয়ার অভিযোগও উঠেছে। তবে এই সবে কান না দিয়ে নিজেদের লক্ষ্যে আন্দোলন জারি রাখতে চাইছেন কিঞ্জলরা।