আরজি কর মামলায় অভিজিৎ মণ্ডল এবং সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে ৯০ দিনেও চার্জশিট পেশ করতে পারেনি সিবিআই। এরই জেরে জামিন পেয়ে গিয়েছেন দু'জনেই। এর জেরে ফের পথে নেমেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। আর তাঁদের সঙ্গে পথে নেমেছেন নির্যাতিতার মা-বাবাও। আর এবারে আন্দোলন থামাতে বারণ করে দিলেন তরুণী চিকিৎসকের মা নিজেই। গতকাল আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে নির্যাতিতার মা বলেন, 'যতদিন আন্দোলনের চাপ ছিল, সঠিক পথে তদন্ত হচ্ছিল। তখনই সকলকে গ্রেফতার করেছিল। আন্দোলন আগের মতো থাকলে সিবিআই এই কাজ করতে পারত না। তাঁর কথায়, এবার আর আন্দোলন থামতে দিলে চলবে না।' (আরও পড়ুন: ১২ ডিগ্রির ঘরে কলকাতার পারদ, সাগরে তৈরি নিম্নচাপ, প্রভাব পড়বে বাংলার আবহাওয়ায়?)
আরও পড়ুন: 'কথা বলেছেন সেলিম, সাসপেনশন যে উঠেছে বুঝতেই দেননি তিনি', বললেন তন্ময় ভট্টাচার্য
এদিকে আরজি কর মামলার বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে সম্প্রতি দীর্ঘ এক পোস্ট করেন কুণাল ঘোষ। তিনি আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের তোপ দেগেছেন। এই নিয়ে কুণাল ঘোষ লেখেন, 'আরজি কর। অভয়ার মৃত্যু ভয়াবহ। নিন্দার। প্রতিবাদের। কিন্তু সেটা ভাঙিয়ে সুযোগসন্ধানীদের ব্যক্তিগত কেরিয়ার বা রাজনীতির পরিকল্পিত নাটক করা হয়েছিল। কারা সিবিআই ডেকে এনেছে? কারা সূত্র বলে গল্প ছেড়েছে? কারা টিভিতে একই ছাপ মারা মুখ বসিয়ে দিনের পর দিন মানুষকে ভুল বুঝিয়েছে? কারা প্রথমে ময়নাতদন্তের সব ঠিকঠাক বলে সই করেও পরে তা গোপন করে বিপ্লবী সেজেছে?' (আরও পড়ুন: বিচারে বিলম্বের জন্য এবার আরজি করের নির্যাতিতার বাবা-মাকেই দায়ী করলেন কুণাল ঘোষ!)
আরও পড়ুন: গলফগ্রিনে কাটা মুন্ডু কাণ্ডে মিলল বাকি দেহ, কেন শ্যালিকাকে খুন জামাইবাবুর?
এরপর কুণাল আরও লেখেন, 'শিয়ালদা কোর্টে বিচার চলছে দোষীর ( ধরেছিল কলকাতা পুলিশ)। সুপ্রিম কোর্ট মনিটর করেছে। আপনাদেরও আইনজীবীরা ছিলেন। কোনও অসঙ্গতি নেই। উল্টে আপনাদের আইনজীবী বদল হয়েছে একাধিকবার। ডাক্তারদের গোষ্ঠীবাজি, কিছু ব্যক্তির ধান্ধাবাজি, কিছু রাজনৈতিক অপচেষ্টা, মিডিয়ার টিআরপির লড়াই, বাংলাদেশের অস্থিরতার টাটকা অনুপ্রেরণা। কী ভেবেছিলেন? ফেসবুক পোস্টকে মান্যতা দিয়ে কোর্ট আপনাদের ইচ্ছেমত লোকদের ফাঁসি দেবে? কলকাতা পুলিশ খারাপ, এখন সিবিআই খারাপ, শিয়ালদা কোর্টে নাকি বিচার হচ্ছে না, সুপ্রিম কোর্টে আস্থা নেই; এই বেয়াদপি বরদাস্ত হবে? অপছন্দ হলেই সেটিং তত্ত্ব? তাহলে সিবিআইকে নেমতন্ন করে এনেছিলেন কেন?' (আরও পড়ুন: আরজি করের আটতলার ঘর কেন সিল করা হয়েছে? ফের মিলছে রহস্যের গন্ধ)
আরও পড়ুন: গ্রেফতার ৪, সুনামগঞ্জে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনায় অবশেষে পদক্ষেপ পুলিশের
এরপর তৃণমূল নেতা লেখেন, 'অভয়ার মৃত্যুকে ঘিরে নিজেদের আখের গোছানো কয়েকটা ধান্ধাবাজের গায়ে লেগেছে। মানসিক হতাশা থেকে এখনও আরও বিষ ছড়াবে। তোলা টাকার দখল রাখতে ফের মোমবাতি কেনার নাটক হবে। এদের জন্যেই আসল দোষীর ফাঁসির রায়তে বিলম্ব হচ্ছে। ওদিকে কুলতলি, ফরাক্কার ঘটনায় ফাঁসি ঘোষিত দুমাসে। আরজিকর কেন্দ্রিক নাটকবাজ, স্বার্থান্বেষীরা মানুষের আবেগ নিয়ে ছেলেখেলা করে নিজের ধান্ধাপূরণের চেষ্টা করেছে। এরা আর সঞ্জয় রাই, মুদ্রার এপিঠ, ওপিঠ।'
উল্লেখ্য, সময়ের মধ্যে সিবিআই চার্জশিট জমা দিতে না পারায় তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় জামিন পেয়েছেন আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। এই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন নির্যাতিতার বাবা। এই ঘটনায় জুনিয়র ডাক্তাররাও হতাশ হয়ে পড়েছেন। এই নিয়ে নির্যাতিতার বাবা বলেন, 'খুবই দুঃখজনক ঘটনা। সিবিআই আগেই লিখে দিয়েছিল সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে ৯০ দিনের মধ্যেই যা করার করব। তদন্ত যে ঠিক মতো হয়নি তার প্রমাণ তো পাওয়াই গেল। সিবিআইয়ের উপর এবার হতাশ হচ্ছি। আমরা আদালতে যাব। আদালত ছাড়া তো আমাদের আর কোনও রাস্তা খোলা নেই।' আর জুনিয়র ডাক্তাররা আজ ফের পথে নামার ডাক দিয়েছেন। আজ সিজিও কমপ্লেক্স অভিযানে যাওয়ার কথা তাঁদের।