আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় একা সঞ্জয় রায়ই কি অপরাধী? নাকি ঘটনায় তার সাথে আরও কেউ জড়িত ছিল? ক্রমেই এই প্রশ্ন তুলে সরব হচ্ছেন চিকিৎসক, পড়ুয়া এবং রাজনীতিবিদদের একাংশ। উল্লেখ্য, ট্রেনি চিকিৎসককে একাধিক ধর্ষণ করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে রিপোর্ট থেকে। এই আবহে কীভাবে একবারও সেই তরুণী চিৎকার করলেন না? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই আবহে অনেকেরই অনুমান, সঞ্জয়ের সঙ্গে এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত ছিল। এই আবহে হয়ত কেউ একজন নির্যাতিতার মুখ চেপে ধরে রেখেছিল। এদিকে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এও দাবি করা হয়েছে, হামলাকারীর বিরুদ্ধে স্বভাবত যতটা প্রতিরোধ দেখানোর কথা ছিল, তরুণী তা দেখাতে পারেননি। এই পরিস্থিতিতে দু'টো সম্ভাবনার কথা সামনে আসছে। আন্দোলনকারী চিকিৎসদের দাবি, ঘটনায় আরও কেউ যুক্ত, এবং সেই অন্য কেউ তরুণীকে ধরে রেখেছিলেন। অপরদিকে পুলিশ আপাতত অনুমান করছে, আগেই তরুণীকে খুন করা হয়, তারপর তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। (আরও পড়ুন: 'যোগী স্টাইলে' ধর্ষকের এনকাউন্টারের পক্ষে সওয়াল অভিষেকের, উলটো সুর ফিরহাদের গলায়)
আরও পড়ুন: ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলায় বিধিনিষেধ, নোট বাতিলের আতঙ্ক, ভারতের ১ লাখ বাংলাদেশে কত?
পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, আরজি করের চেস্ট বিভাগের সেমিনার হলে এই নৃশংস ঘটনাটি ঘটেছিল ভোর ৪টে থেকে সাড়ে ৪টের মধ্যে। তদন্তকারীরা জানান, যখন সঞ্জয় হামলা চালায়, তখন সেই চিকিৎসক গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। টানা ডিউটির জেরেই তিনি অত্যন্ত ক্লান্ত ছিলেন বলে অনুমান পুলিশের। এদিকে ময়নাতদন্তে বলা হয়েছে, আক্রমণের সময় ওই মহিলার নিজেকে বাঁচাতে যতটা প্রতিরোধ করা স্বাভাবিক ততটা করতে পারেননি। এই নিয়ে ভাবনায় পড়েছেন তদন্তকারী অফিসাররা। পুলিশের অনুমান, মৃত্যুর পর সম্ভবত ধর্ষণ করা হয় তাঁকে। এদিকে আরও একটি বিষয় নিয়ে পুলিশ ভাবনায় পড়েছে। হামলার সময় কি একবারও চিৎকার করতে পারেননি সেই নির্যাতিতা? যদি প্রথমে খুনের চেষ্টাও হয়ে থাকে, তাহলেও তো প্রতিরোধ করার বা সাহায্য চাওয়ার জন্যে চিৎকার করা স্বাভাবি। এদিকে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ নাকি নির্যাতিতার মা-বাবাকে বলেছিল, তাঁদের মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। এই আবহে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এমন পরিস্থিতিতে একটি রক্তাক্ত দেহ দেখে পুলিশ কীভাবে এবং কেন আত্মহত্যার দাবি করল প্রাথমিক ভাবে?
আরও পড়ুন: 'সেন্ট মার্টিন না দেওয়ায় USA…', বাংলাদেশ ত্যাগের পর এই প্রথম মুখ খুললেন হাসিনা
এদিকে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছিল চেস্ট মেডিসিনের ওয়ার্ডের মধ্য় দিয়ে সঞ্জয় রায় যাচ্ছে সেমিনার হলের দিকে। কিন্তু সেখানে যে চিকিৎসক আছেন, সেটা সঞ্জয় কী করে জানল? এই আবহে পুলিশের মনে প্রশ্ন, কেবলমাত্র যৌন লালসা মেটানোর জন্যই কি সঞ্জয় এই ঘটনা ঘটিয়েছিল? আর কেউ কি যুক্ত ছিল এই খুনের ঘটনায়? অনেকদিন ধরেই কি নির্যাতিতাকে লক্ষ্য করছিল সঞ্জয়?
আরও পড়ুন: সংসদে ১০% সংরক্ষণ চাই, ঢাকা-চট্টগ্রাম অচল করলেন হিন্দুরা, কী বললেন ইউনুস?
রিপোর্ট অনুযায়ী, তরুণী চিকিৎসকের দুই চোখ দিয়েই রক্ত বেরিয়েছিল। তাঁর মুখেও রক্ত ছিল। এছাড়া যৌনাঙ্গে ক্ষত, মুখে, নখে, পায়ে, পেটে, হাতে, ঠোঁটে আঘাতের চিহ্ন ছিল। ময়নাতদন্তে নামকি জানা গিয়েছে, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে সেই তরুণীকে। এদিকে সেই চিকিৎসকের গলার ডান দিকের একটা হাড় ভাঙা রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। কার্পেটের উপর থেকে একাধিক চুল পাওয়া গিয়েছে। নীল রঙের কার্পেটে মিলেছে ছোপ রক্তের দাগ।