আরজি কর হাসপাতালে ঠিক কোন সময় মৃত্যু ঘটেছিল সেই তরুণী চিকিৎসকের? আরজি কর মামলায় রায়দানের সময় এই প্রশ্ন নাকি অনেকটাই ভাবিয়েছিল বিচারক অনির্বাণ দাসকে। তাঁর রায়ে তিনি জানিয়েছেন, পাকস্থলীতে খাদ্যের বিশ্লেষণ করে এই নিয়ে জবাবের খোঁজ করেছিলেন বিচারক। রায়ের কপি অনুযায়ী, চিকিৎসকের মৃত্যুর সম্ভাব্য সময়ের ১৫ মিনিট আগেই ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল সঞ্জয় রায়। রায়ের কপি থেকে জানা গিয়েছে, শুনানির সময় আদালতে দাঁড়িয়ে চিকিৎক অপূর্ব বিশ্বাস জানিয়েছেন ময়নাতদন্তে মৃতার পাকস্থলী থেকে ১৮৫ গ্রাম আংশিক হজম হওয়া খাবার মিলেছে। এই আবহে তিনি বিশ্লেষণ করে জানিয়েছিলেন ময়নাতদন্তের প্রায় ১৯ ঘণ্টা আগে নির্যাতিতার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। (আরও পড়ুন: দেওয়ালে ছিল রক্তের ছোপ, কেন 'সিল করে' আরজি করের ৮ তলার ঘর পরীক্ষা করেনি CBI?)
আরও পড়ুন: শীর্ষে ওড়িশা, আর্থিক স্বাস্থ্যের নিরিখে নীচের সারিতে বাংলা: নীতি আয়োগ
আরও পড়ুন: BGB প্রধানের ভারত সফর ইস্যুতে 'ঝড়' বাংলাদেশে? মুখ খুলল সীমান্তরক্ষী বাহিনী
উল্লেখ্য, ৯ অগস্ট মৃতদেহ উদ্ধারের দিন ময়না তদন্ত হয়েছিল সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিট থেকে ৭টা ১০ মিনিটের মধ্যে। এই আবহে আদালতে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের বয়ান অনুযায়ী, নির্যাতিতার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে ৮ অগস্ট রাত ১১টার আশেপাশে। তবে সেই তরুণী চিকিৎসকের সঙ্গে ডিনার করা গোলম আজম এবং অর্ক সেন দাবি করেছেন সাড়ে ১১টা নাগাদ তাঁরা ডিনার শুরু করেছিলেন। এদিকে তাঁদের বয়ানেও মিল নেই। গোলাম দাবি করেছিল, খাওয়া শেষ হয় ১২টা ৪৫ মিনিট নাগাদ। অর্ক দাবি করেন, ডিনর শেষ হয়েছিল ১টা ১৫ মিনিটে। (আরও পড়ুন: বাংলাদেশের পাশে থাকতে চাই, সীমান্তে কাঁটাতার বিবাদের মাঝে বার্তা ভারতের)
আরও পড়ুন: 'ভারতই সব কিছুর মূলে', ভরা সভায় 'খুনের' নিদান বাংলাদেশি ইসলামি নেতার
আরও পড়ুন: গড়ে উঠবে নতুন ২ কারখানা, কয়েক কোটির বিনিয়োগ হবে হলদিয়ায়
এই বিষয়ে দিল্লি এইমসের এক বিশেষজ্ঞ দাবি করেছিলেন, প্রথম গ্রাস মুখে দেওয়ার ১০ মিনিট পর থেকেই পাকস্থলী ফাঁকা হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে। এই আবহে বিশেষজ্ঞের মতে স্বল্প পরিমাণ খাবার, মাঝারি খাবার এবং ভারী খাবার বার হতে সময় লাগে যথাক্রমে ১ থেকে ২ ঘণ্টা, ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ও ৫ থেকে ৮ ঘণ্টা। কার্বোহাইড্রেট পাকস্থলী থেকে দ্রুত বেরিয়ে যায়। তুলনায় প্রোটিন খাবার পাকস্থলী থেকে বেরোতে সময় লাগে বেশি। আর ফ্যাট বের হতে সবচেয়ে বেশি সময় লাগে। আর মিশ্র খাবার পুরোপুরি পাকস্থলী থেকে বের হতে সময় লাগে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা। এই আবহে তরুণীর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে ভোর ৪টে ৪৫ মিনিট থেকে ৫টা ১৫ মিনিটের মধ্যে। এদিকে সিসিটিভি থেকে জানা যাচ্ছে, সঞ্জয় রায় সেদিন ভোর ৪টে ৩ মিনিট ৩১ সেকেন্ডে সেখানে ঢুকেছিল। আর সঞ্জয় সেখান থেকে বেরিয়ে যায় ৪টে ৩১ মিনিট ৪০ সেকেন্ড নাগাদ। এদিকে সঞ্জয় দাবি করেছিল সে নাকি সেই সময়কালে এক রোগীকে খুঁজতে গিয়েছিল। তখন পুরুষ ওয়ার্ডে একটি বেডে শুয়ে ছিল। তবে নিজের দাবি প্রমাণ করতে কোনও সাক্ষী আদালতে পেশ করেনি সঞ্জয়ের আইনজীবী। এই আবহে তার সেই দাবি আদালত মানেনি। এই আবহে সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।