২০২৩ সালে চিরকুটে ডিএ বেড়েছিল। এরপর ২০২৪ সালের বাজেটে 'ছাপা অক্ষরেই' লেখা হয়েছিল ৪ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা। বছর বছর ডিএ বৃদ্ধি নিয়ে এবছরও আশা করে আছেন সরকারি কর্মীরা। তবে ডিএ বাড়লেও তাতে সরকারি কর্মীদের সঙ্গে কি ফারাক কমবে? হয়ত সাময়ি কভাবে সেই ডিএ ফারাক কমবে। তবে এই বছর জানুয়ারি থেকে ফের কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ডিএ বৃদ্ধি কার্যকর হলে রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্রের সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতার ফারাক বেড়ে যাবে। এদিকে এবারের বাজেট ঘোষণার আগের থেকে জল্পনা চলছিল, এবারে ৬ শতাংশ ডিএ বাড়তে পারে। যদি ছয় শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বাড়ানো হয়, তাহলে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ বেড়ে হবে ২০ শতাংশ। তাহলে তাৎক্ষণিক ভাবে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের সঙ্গে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ ফারাক দাঁড়াবে ৩৩ শতাংশ। (আরও পড়ুন: সরকারি কর্মীদের মাথায় পড়বে হাত? গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের পর এল বড় খবর)
আরও পড়ুন: ধানমন্ডি কাণ্ডের মাঝেই বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করবেন জয়শংকর?
এই আবহে সংগঠন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ়ের সভাপতি শ্যামল কুমার মিত্র সম্প্রতি আনন্দবাজার পত্রিকাকে বলেন, ‘রাজ্য সরকার বলছে, ডিএ না দিয়ে সেই অর্থ উন্নয়নে ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০১১ সালের জুন মাস থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ডিএ-খাতে সরকার সাশ্রয় করেছে ২ লক্ষ ১৯ হাজার কোটি টাকা। ডিএ-র টাকায় উন্নয়ন হয়ে থাকলে তার কৃতিত্ব নিজে না নিয়ে কর্মচারীদের দেওয়া উচিত মুখ্যমন্ত্রীর।’ উল্লেখ্য, কেন্দ্রে ডিএ নিয়ম করে বাড়ে বছরে দু'বার (কোভিডকাল ছাড়া)। তবে বাংলায় কবে ডিএ বাড়বে, তার কোনও নির্দিষ্ট সময়কাল নেই। কখনও বড়দিনের অনুষ্ঠানে তা বাড়ে, কখনও বাজেটে চিরকুটে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে ১৪ শতাংশ হারে ডিএ পাচ্ছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। আর কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ডিএ বেড়ে ৫৩ শতাংশ হয়েছে। এই আবহে কেন্দ্রীয় কর্মীদের সঙ্গে রাজ্যের কর্মচারীদের ডিএ-র ফারাক বেড়েছে আরও। গত ২০২৩ সালের বড়দিনে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ বাড়ানো হয়েছিল। তবে ২০২৪-এর বড়দিনে আর সেই সংক্রান্ত কোনও ঘোষণা করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে ডিএ আন্দোলনকারীদের দাবি, প্রাপ্য আরও ৩৯ শতাংশ ডিএ দিতে হবে রাজ্যকে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার নিজেদের অবস্থানে অনড় থেকে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে ১৯৭০ সালের পে কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এই কারণে কেন্দ্রে যখন পঞ্চম বেতন কমিশন কার্যকর হয়, তখন রাজ্যে চতুর্থ কমিশন আসে। আর কেন্দ্রে সপ্তমের জায়গায় রাজ্যে বর্তমানে ষষ্ঠ বেতন কমিশন কার্যকর হয়েছে। (আরও পড়ুন: ‘অজুহাত…’, হাসিনা ইস্যুতে ভারতের মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন, হাল না ছাড়ার বার্তা ঢাকার)
আর এদিকে সম্প্রতি ক্যাবিনেট বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের বেতন সংশোধনের জন্য অষ্টম বেতন কমিশনে অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। এদিকে ২০২৫ সালের বাজেট ঘোষণার কয়েকদিন আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অষ্টম বেতন কমিশন অনুমোদনের ঘোষণা করলেও তা কবে স্থাপন করা হবে তার সঠিক তারিখ এখনও ঘোষণা করা হয়নি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অবশ্য ঘোষণা করেছেন, ২০২৬ সালের মধ্যে কমিশন গঠন করা হবে। অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, অষ্টম বেতন কমিশন চালু হওয়ার বিষয়টি দেখভালের জন্য শীঘ্রই চেয়ারম্যান ও দু'জন সদস্য নিয়োগ করা হবে।
উল্লেখ্য, সাধারণত মার্চ মাসে হোলির আগে ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকার। এরই মাঝে ১০ ফেব্রুয়ারি একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর জয়েন্ট কনসালটেটিভ মেশিনারি (এনসি জেসিএম)-এর স্থায়ী কমিটির স্টাফদের সাথে কর্মী ও প্রশিক্ষণ বিভাগ (ডিওপিটি) এই বৈঠকটি ডেকেছিল। অষ্টম বেতন কমিশনের টার্মস অফ রেফারেন্স নিয়ে এই বৈঠকে আলোচনা হয় বলে জানা যায় রিপোর্টে। এনসি-জেসিএম অষ্টম বেতন কমিশনের বিষয়ে সরকারের কাছে নানা পরামর্শ এবং প্রস্তাব পাঠিয়েছিল।