পূর্ব বর্ধমানে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের সভায় শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। রবিবার ওই সভা হবে। সেদিন স্কুল খোলা থাকবে না। পরীক্ষাও নেই। তবে শর্তসাপেক্ষে ওই সভার অনুমতি দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। এই বিষয়ে বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশ, কোনও পরীক্ষার্থীর যাতে সমস্যা না হয়, সেটা দেখার দায়িত্ব মামলাকারীর। বেশ কিছু শর্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছে এই সভা উপলক্ষ্যে। শর্ত মেনে সভা করতে হবে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি। বর্ধমানের সাই কমপ্লেক্সের মাঠে ওই সভা হবে আদালতের শর্ত মেনেই।
এদিকে এই একাধিক শর্তের মধ্যে রয়েছে—বর্ধমানের সভা করতে হবে ‘ন্যূনতম শব্দে’। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ শব্দের যে মাত্রা বেঁধে দিয়েছে সেটা মানতে হবে। বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন, ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিটের মধ্যে সারতে হবে বর্ধমানের সভা। কোনও পরীক্ষার্থীর যাতে অসুবিধা না হয় সেটা করতে হবে। শব্দ নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। আর মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন আরএসএস প্রধানের সভা নিয়ে আপত্তি তোলে প্রশাসন। ওই সভায় মাইক বাজানোর অনুমতি দেননি বর্ধমান উত্তরের মহকুমাশাসক তীর্থঙ্কর বিশ্বাস। তিনি বলেছিলেন, ‘এখন মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। তাই আমি সভায় মাইক বাজানোর অনুমতি দিইনি। এতে পরীক্ষার্থীদের সমস্যা হতে পারে। পুলিশকে বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছি।’
আরও পড়ুন: ভ্যালেন্টাইন ডে’তে কি প্রেম নিবেদনে বাধা হচ্ছে বজরং দল? পাল্টা ‘আইটি উইং’ তৃণমূলের
অন্যদিকে দু’পক্ষের সওয়াল–জবাব যখন চলছে তখন মামলাকারীর আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী আজ, শুক্রবার ভরা এজলাসে বলেন, ‘বর্ধমানের ওই মাঠ ৫০ বিঘা জমি জুড়ে। ১–২ কিমির মধ্যে কোনও স্কুল–কলেজ নেই। তাই কোনও অনুমতির দরকার নেই। মোহন ভাগবত আসবেন। এসডিও’কে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, লাউড স্পিকার ব্যবহার করা হবে। গতকাল আমাদের জানানো হয়েছে, কোনও সাউন্ড বক্স ব্যবহার করলে সভার অনুমতি বাতিল হবে। কিন্তু লিখিতভাবে তা দেওয়া হয়নি। কোনও সাইলেন্স জোন নেই সেখানে। আমরা পরে জানাই, কোনও লাউড স্পিকার ব্যবহার করব না।’
এছাড়া সাংগঠনিক দুর্বলতা সমাধানের রাস্তা বের করতে রাজ্য সফরে এসেছেন মোহন ভাগবত। টানা কদিন কলকাতায় থাকবেন তিনি। আর বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে সংঘের সদস্যদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করার কথা তাঁর। জেলাশাসকের সেই আপত্তি উড়িয়ে মোহন ভাগবতের সেই অনুষ্ঠানের অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি অমৃতা সিনহা প্রশ্ন করেন, ‘কতজন আসবেন ওই সভায়। যেখানে সভা হচ্ছে, সেটা কি মার্ক করা হয়েছে? যদি মাইক ব্যবহার না করা হয়? ৫০০ মিটারের বাইরে স্কুল। কোথায় অসুবিধা? মাত্র ১৫ মিনিট হবে সভা।’ রাজ্যের পক্ষ থেকে অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্তের সওয়াল, ‘ওই এলাকায় তিনটি স্কুল আছে। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার শুরু থেকে পরীক্ষার শেষ দিন পর্যন্ত এলাকায় মাইক বাজানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ২০২৪ সালের জুন মাসেই এই বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে নিয়ম জারি করা হবে বলা হয়েছিল। জেনেশুনে আরএসএস এই কর্মসূচির আয়োজন করেছে।’ তবে বক্তব্য শুনে বিচারপতি জানান, ভাগবতের সভা নির্ধারিত দিনে নির্ধারিত সময়েই হবে।