২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। শরিকদের সাহায্য নিয়ে এনডিএ সরকার গড়েছে। ফলপ্রকাশের পর এই বিষয়ে নাম না করে মোদী–শাহ জুটিকে বিধেঁছিলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। এই নিয়ে আগেই হতাশা প্রকাশ করেছিল আরএসএস। বিজেপির ভরাডুবির পিছনে এবার আরএসএসের মুখপত্রে স্বীকার করে নেওয়া হল, বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে গ্রহণযোগ্য কোনও মুখ বিজেপির নেই। এই খবর রাজ্যে চাউর হতেই বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছে বঙ্গ–বিজেপি নেতৃত্ব।
এদিকে জাতীয় রাজনীতিতে এবং বাংলাতেও বিজেপির শোচনীয় খারাপ ফল হয়েছে। ৩০টি আসনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক হলেও মিলেছে মাত্র ১২টি। অর্থাৎ ২০১৯ সালের থেকে ৬টি আসন কমে গিয়েছে বাংলায়। সেখানে গত লোকসভা নির্বাচনের চেয়ে সাতটি বেশি আসনে জিতে ২৯টি আসনে পৌঁছেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আরএসএসের মুখপত্র ‘স্বস্তিকা’ পত্রিকায় প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘চার বছর পরেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোনও গ্রহণযোগ্য, জোরদার মুখ না থাকায় ভাল ফল করতে পারেনি বিজেপি নেতৃত্ব। ২০১৯ সালের পর তিনটি নির্বাচনের দুটিতে গোহারা হতে হয়েছে বিজেপিকে। এমনকী ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন এই রাজ্যে বিজেপির শেষ অগ্নিপরীক্ষা।’ এমন মন্তব্যে বঙ্গ–বিজেপি আরও কোণঠাসা হয়ে গেল।
আরও পড়ুন: ‘নরেন্দ্র মোদী এখন সম্পূর্ণ অসহায়’, নিট–পিজি পরীক্ষা স্থগিত হতেই আক্রমণে রাহুল গান্ধী
অন্যদিকে বাংলায় বিজেপির ফল খারাপের জন্য আরএসএসের পত্রিকা ‘স্বস্তিকায়’ একাধিক কারণ তুলে ধরা হল। ‘স্বস্তিকা’য় লেখা প্রতিবেদনে বাংলায় ভরাডুবির জন্য প্রধান যে কারণ উল্লেখ করা হয়েছে সেটা যথেষ্ঠ তাৎপর্যপূর্ণ। প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোনও গ্রহণযোগ্য, জোরদার মুখ ছিল না বিজেপির। অজানা–অচেনা আর চমকদার প্রার্থী দেওয়ার ফলে খেসারত দিতে হয়েছে বিজেপিকে। দুর্বল সংগঠন আর মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ না থাকাও একটা বড় কারণ। এই কারণটি অবশ্য পরাজিত প্রার্থী দিলীপ ঘোষও আগে বলেছিলেন। সেটাতেই সিলমোহর দিল আরএসএস।
এছাড়া বিজেপির যে উচ্চাশার ফানুস তৈরি হয়েছিল সেটা ফুটো হয়ে গিয়েছে ফল প্রকাশের পরই। আরএসএসের মুখপত্র স্বস্তিকায় ১৭ জুনের সংখ্যায় দিলীপ ঘোষের আসন বদলে দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও সমালোচনা করা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের একাধিক সামাজিক প্রকল্প যে মানুষকে আরও বেশি করে তৃণমূলমুখী করেছে সেটাও উল্লেখ করা হয়েছে। আত্মসমালোচনার পরামর্শ দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিজেদের দোষ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করলে ভবিষ্যতের পক্ষে ভাল হবে। সাংগঠনিক দুর্বলতায় বিজেপি ৬টি আসন, আনুমানিক ১.৫ শতাংশ ভোট হারিয়েছে। সঙ্গে জুড়েছে নেতাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।