আজ সকালে প্রয়াত রাজ্যের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন তিনি। গতবছর বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। এর আগে বিধানসভা নির্বাচনের সময়ও একবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরে অবশ্য সুস্থ হয়ে ফিরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভায় দু’টি মন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। যদিও দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকার দরুণ তাঁর অধীনে থাকা মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। কয়েকদিন আগে সুব্রতবাবুও প্রয়াত হয়েছিলেন। এদিকে অসুস্থ সাধনবাবুকে দফতরবিহীন মন্ত্রী রেখে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহযোদ্ধা ছিলেন সাধন পাণ্ডে। ৯০-এর দশকে যুবনেত্রীর লড়াইয়ে উদ্বুদ্ধ হয়ে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে নাম লিখিয়েছিলেন তিনি। ৯ বার ভোটে জিতে গিয়েছিলেন বিধানসভায়। কংগ্রেসের টিকিটে বড়তলা থেকে ৬ বার জিতেছিলেন সাধনবাবু। পরবর্তীতে তৃণমূলে যোগ দেন। তৃণমূল প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই তিনি মমতার সহযোদ্ধা হয়ে রাজনৈতিক ময়দানে লড়াই করেছেন। মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে পরপর তিনবার ভোটে জিতে হ্যাটট্রিক করেছিলেন। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা থাকায় ২০১১ সাল থেকেই মন্ত্রী থেকেছেন সাধনবাবু। প্রতিবারই তাঁকে ক্রেতা-সুরক্ষা দপ্তরের দায়িত্ব দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্ত্রী হিসেবে রাজ্যে জনপরিষেবাকে আরও উন্নত করেছিলেন। সাধন পাণ্ডের নেতৃত্বেই ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের কাজের প্রশংসা হয়েছিল রাজ্যজুড়ে। ২০২১ সালের নির্বাচনে বিজেপির কল্যাণ চৌবেকে হারান ২০,২৩৮ ভোটে। পরে ১০ মে তিনি মন্ত্রী হিসেবে শপথবাক্য পাঠ করেন। এর কিছুদিন পরই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের পর আজ মুম্বইতে প্রয়াত হন তিনি।
রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর শোকবার্তা প্রকাশ করা হয়। তাতে লেখা, ‘রাজ্যের প্রবীণ মন্ত্রী সাধন পান্ডের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি আজ মুম্বইয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। সাধন পান্ডে দীর্ঘদিন কলকাতার বড়তলা কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন। ২০১১ সাল থেকে তিনি মানিকতলা কেন্দ্রের বিধায়ক। বিভিন্ন উন্নয়ন ও সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মী সাধনদার সঙ্গে আমার অত্যন্ত হৃদ্য সম্পর্ক ছিল। তাঁর মৃত্যুতে রাজনৈতিক জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি আমার অগ্রজকে হারালাম। আমি সাধন পান্ডের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’