শহর কলকাতার নানা জায়গায় জবরদখল করে বসে পড়ছে হকার। আর তা নিয়েই সোমবার রণংদেহী মেজাজে কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই পরিস্থিতি কাটাতে পুলিশ প্রশাসনকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেন মুখ্যমন্ত্রী। আর তারপরই তৎপর হয় পুলিশ প্রশাসন। সোমবার সন্ধ্যেবেলা থেকেই তৎপরতা দেখা গিয়েছিল। আর আজ, মঙ্গলবার সেটা বড় আকার পেল। সেক্টর ফাইভে জবরদখল করে রাখা ফুটপাথ দখলমুক্ত করতে উদ্যোগ নিল ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিশ। জোরদার শুরু হয়েছে অভিযান। যৌথ অভিযানে নেমেছে পুলিশ–পুরসভা। শুধু সেক্টর ফাইভ নয়, সেক্টর থ্রিতেও অভিযান চলছে।
এদিকে পুরসভার পরিষেবা নিয়ে অগ্নিশর্মা হন মুখ্যমন্ত্রী। কেন ঠিকঠাক নাগরিক পরিষেবা মিলছে না তা নিয়ে চাঁচাছোলা ভাষায় সমালোচনা করেন কাউন্সিলর থেকে পুরসভার নানা স্তরের কর্তাদের। এমনকী রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর নাম করে ভৎর্সনাও করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষ্কার বলেন, ‘রাজারহাট, সল্টলেক দখল হচ্ছে। সল্টলেকে সুজিত বসু বাইরের লোক বসাচ্ছে। কেন বাইরের লোক বসবে? এআরডি অফিসের সামনে ত্রিপল পেতে বসে পড়ছে। ছবি দেখালে লজ্জা পেয়ে যাবেন। হোয়াই হোয়াই হোয়াই? কাকে টাকা দিতে হয়েছে? আমি জানতে চাই। কেন পুরসভার কাউন্সিলররা কাজ করে না? এবার কি আমাকে রাস্তা ঝাঁট দিতে হবে?’ তার পর থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে ধরপাকড়।
অন্যদিকে আজ সকাল থেকে অভিযান শুরু হয়ে যায় সল্টলেকে। একের পর এক দোকানে গিয়ে দোকানের বর্ধিত অংশ বেআইনিভাবে ফুটপাথের উপরে থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সাফ নির্দেশ দেওয়া হয়। ফুটপাথ দিয়ে যাতায়াত করার ক্ষেত্রে মানুষের যাতে কোনওরকম অসুবিধা না হয়, তাই দোকানের বেরিয়ে থাকা অংশ সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা। দোকানদারকে প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশ, এভাবে ফুটপাথ দখল করে রাখা যাবে না। এই ধরনের অভিযান লাগাতার চলবে বলেও জানিয়ে দেন প্রশাসনিক অফিসাররা।
আরও পড়ুন: দুটি প্রাপ্তিযোগ ঘটল বড়ঞার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়কের, জীবনকৃষ্ণ হয়ে উঠলেন ‘জীবন’
এছাড়া সকাল থেকেই সেক্টর ফাইভের কলেজ মোড়ে পৌঁছে যায় ইলেকট্রনিক্স থানার পুলিশ। এখানে কলেজ মোড়ের ফুটপাথের ৯০ শতাংশই দখল করে নিয়েছেন হকাররা। কড়া ভাষায় তাঁদের আজ পুলিশের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, ফুটপাথের ওই অংশ দখলমুক্ত করতে হবে। এসএসকেএম হাসপাতালের বাইরে ফুটপাথের জবরদখল সরানোরও চেষ্টা করা হয়। সেখানে পৌঁছে যান স্থানীয় কাউন্সিলর। সেখানে ফুটপাথে সারি বেঁধে এত দোকান দেখে দোকানিদেরই চূড়ান্ত ‘ওয়ার্নিং’ দেওয়া হয় বলে জানালেন কাউন্সিলর। বেআইনিভাবে বসা সমস্ত ব্যবসায়ীদের পুলিশের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, কোনওভাবেই রাস্তার উপর জিনিসপত্র রেখে ব্যবসা করা যাবে না। যে সমস্ত হকারের ওই জায়গায় দোকান করার অনুমতি আছে, সেই অনুমতির নথি দোকানের গায়ে ঝুলিয়ে রাখতে হবে।