বাসের রেষারেষিতে এক ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে সল্টলেক। মঙ্গলবার মায়ের স্কুটিতে বসে স্কুল থেকে ফেরার সময় বাসের রেষারেষির জেরে সল্টলেকের দু'নম্বর গেটের কাছে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রের মৃত্যু হয়। আর তারপরই পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এক মহিলা বলেন, ‘পুলিশ শুধু টাকা চেনে। টাকা দিলেই সব হয়ে যাবে।’ অপর এক যুবক অভিযোগ করেন, ‘যখন অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছিল, তখন পুলিশ বাস ও ড্রাইভারকে নিয়ে চলে গেল। বাচ্চাটাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়নি। তখন মায়ের সঙ্গে একটা পুলিশও ছিল না।’ বিষয়টি নিয়ে পুলিশ আপাতত মুখ না খুললেও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, হামেশাই এরকম একাধিক বাসের মধ্যে রেষারেষি চলে। মঙ্গলবারও ঠিক সেটাই হয়েছে।
রেষারেষি বাসের, ধাক্কা স্কুটিতে
স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেছেন, মঙ্গলবার ২১৫এ রুটের দুটি বাসের মধ্যে রেষারেষি চলছিল। কোনটি আগে যাবে, সেটার জন্য বেপরোয়া গতিতে বাস চালাচ্ছিলেন দুই চালকই। সেইসময় স্কুটিতে ধাক্কা মারে একটি বাস। স্কুটিতে মায়ের সঙ্গে দুই খুদে ছিল। তিনজনেই ছিটকে পড়ে যায় রাস্তায়। হাসপাতালে মৃত্যু হয় কেষ্টপুরের একটি বেসরকারি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রের। মাও হাসপাতালে ভরতি আছেন।
পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ স্থানীয় বাসিন্দাদের
সেই ঘটনার পরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। অবরোধ করা হয় রাস্তা। ভাঙচুর করা হয় বাস। পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তোলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। উত্তেজিত জনতার ক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে পুলিশ। তাতে অবশ্য কোনও লাভ হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভের মাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। তার জেরে প্রবল যানজট তৈরি হয়। কিছুটা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় শেষপর্যন্ত।
বেহালা থেকে বাঁশদ্রোণী- বাববার এরকম ঘটনা ঘটেছে
আর যে ছবিটা দেখল সল্টলেক, প্রথমবার সেরকম মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হল না কলকাতা বা সংলগ্ন শহরতলির এলাকা। গত বছর অগস্টে বেহালায় লরির ধাক্কায় দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছিল। সকালে বাবার সঙ্গে স্কুলে যাওয়ার সময় তাকে পিষে দিয়েছিল একটি লরি। সেই ঘটনার পরে উত্তপ্ত হয়েছিল বেহালা। পুলিশ এবং উত্তেজিত জনতার মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে গিয়েছিল। ভাঙচুর চালানো হয়েছিল সরকারি বাসে। পুলিশের বাইকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
আর মাসখানেক আগে বাঁশদ্রোণীতে জেসিবির ধাক্কায় এক নবম শ্রেণির ছাত্রের মৃত্যু হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। মহালয়ার দিন সেই ঘটনা ঘটেছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেছিলেন, পড়তে যাওয়ার পরে তাকে ধাক্কা মেরেছিল জেসিবি। সেই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে চরমে উঠেছিল ক্ষোভ। কাঁদাজলে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল পাটুলি থানার ওসিকে।