ডাঃ সন্দীপ ঘোষ। আরজি কর হাসপাতালের প্রিন্সিপাল ছিলেন তিনি। নানা চাপে পড়ে ইস্তফা দিতে বাধ্য় হয়েছিলেন তিনি। এরপর তাঁকে তড়িঘড়ি ন্যাশানাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষের পদে বসিয়েছিল সরকার। এরপর সেই সন্দীপ ঘোষকে লম্বা ছুটিতে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু সেই সন্দীপ ঘোষ সম্পর্কে কী বলছেন তাঁরই সহকর্মীরা?
তাঁর প্রাক্তন সহকর্মীদের একাংশের দাবি ডাঃ সন্দীপ ঘোষ ছিলেন আগাগোড়া ভীষণ দুর্নীতিগ্রস্ত একজন আধিকারিক। এখানেই প্রশ্ন কেন এত দুর্নীতির অভিযোগ যার বিরুদ্ধে তাঁকে পদে বহাল রাখার জন্য এত উৎসাহ সরকারের?
সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের কাছে মুখ খুলেছেন আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতারি আলি জানিয়েছেন, 'তিনি( সন্দীপ ঘোষ) ছিলেন অত্যন্ত দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষ। আরজিকর মেডিক্যাল ফেল করানো, টেন্ডার থেকে কমিশন নেওয়া, হস্টেল থেকে টাকা নেওয়া, পয়সা খাওয়া, গেস্ট হাউজে স্টুডেন্টদের নিয়ে মদ খাওয়া, আবার তাদের দিয়েই আন্দোলনে নামানো সবটা করান ওই মানুষটি। পুরো কেরিয়ারে এমন বাজে লোক কোনও দিন দেখিনি। ওর নিরাপত্তায় ছিলেন ২০জন। চারজন বাউন্সার ছিলেন। ফিল্ম স্টারদের দেখতাম বাউন্সার নিয়ে চলতেন। কিন্তু কোনও প্রিন্সিপালকে এভাবে বাউন্সার নিয়ে চলত দেখিনি। প্রচন্ড প্রভাবশালী মানুষ। আমি ২০২৩ সালের তাঁর বিরুদ্ধে ভিজিল্যান্সে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। তাঁর বদলি হয়েছিল। তারপরে আবার সেই অর্ডার বদলে গেল। সব নাটক ওনার। তিনি আবার পেটোয়া স্টুডেন্টদের দিয়ে আন্দোলন করান। এর আগে তিনি একটা বিষয়ে এক মাস ধরে আন্দোলন করিয়েছিলেন। এগুলো সব তার আইওয়াশ। তিনি আবার ন্যাশানাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ হয়ে গেলেন। তবে আমি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। '
আরজি কর কাণ্ডে প্রথম থেকেই পড়ুয়া এবং আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের রোষের মুখে পড়েছেন প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। তবে সেই সন্দীপকে কার্যত ক্লিনচিট দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরজি কর থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরপরই সন্দীপকে ন্যাশনাল মেডিক্যালের অধ্যক্ষ করা হয়। তবে হাই কোর্ট সন্দীপ ঘোষকে লম্বা ছুটিতে যেতে বলেছে।
হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, 'বিকেল ৩টে পর্যন্ত সময় দিলাম। এর মধ্যে অধ্যক্ষকে স্বেচ্ছায় ছুটিতে চলে যেতে বলুন। না হলে আমরা নির্দেশ দিতে বাধ্য হব। কীভাবে একজন ইস্তফা দেওয়ার পর, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁকে ফেরত আনা হল? আপনি কি এত পাওয়ারফুল লোক? আপনি হাসপাতালের অভিভাবক। আপনার যদি নির্যাতিতার প্রতি সহানুভূতি না থাকে, তাহলে আর কার থাকবে? কোনও মানুষ আইনের উর্ধ্বে নয়।'