গত ৯ অগস্ট। আরজি কর কাণ্ড কার্যত নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা দেশকে। সরকারি হাসপাতালের সেমিনার রুমের ভেতর ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছিল এক মহিলা চিকিৎসককে। আর সেই ঘটনার পরেই হাসপাতালের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি অভিযোগ ওঠে। গত ১২ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন সন্দীপ। সেচ্ছা অবসরের জন্যও চিঠি পাঠিয়েছিলেন। এবার প্রশ্ন সেই স্বেচ্ছা অবসরের জন্য তিনি ঠিক কী কারণ দেখিয়েছিলেন?
এবার সামনে এসেছে সেই কারণ? সন্দীপ ঠিক কী লিখেছিলেন সেই চিঠিতে? এবিপি আনন্দের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, সেই চিঠিতে লেখা ছিল, ২০০০ সালের ৪ মে থেকে ২৪ বছরের বেশি আমি সরকারি ডাক্তার হিসাবে কাজ করছি। আমার বিরুদ্ধে আদালত বা ভিজিল্যান্সে কোনও মামলা চলছে না। সেকারণেই তিনি স্বেচ্ছা-অবসর চাইছেন। অধ্য়ক্ষের পদ ছাড়তে চেয়েছিলেন তিনি। সেই সঙ্গেই সরকারি চাকরি ছেড়ে দেওয়ার ইচ্ছাও তিনি প্রকাশ করেছিলেন।
কিন্তু সরকার কি তাঁর চাকরি ছাড়ার এই আবেদনকে মান্যতা দিয়েছিল? উত্তরটা হল সরকার সেটা চায়নি। সরকার তাঁকে আরজি কর মেডিক্যাল থেকে সরিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু তারপর সরকার তাঁকে আবার ন্যাশানাল মেডিক্যালে বসিয়ে দেয়।
তবে এভাবে আরজি কর থেকে সরানোর পরে ফের তাকে ন্যাশানাল মেডিক্যাল কলেজে বসিয়ে দেওয়ার ঘটনাকে ঘিরে সমালোচনার ঝড় ওঠে। কেন তাকে এভাবে আরজি কর থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরে ফের ন্যাশানাল মেডিক্যালে বসিয়ে দেওয়া হয় তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। প্রশ্ন তুলেছিল গোটা বাংলা। এমনকী আরজি কর থেকে সন্দীপের ইস্তফা দেওয়া ও তার পরবর্তী ক্ষেত্রে তাঁকে যে অন্য হাসপাতালে নিয়ে আসা হচ্ছে তা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
এদিকে সেই সন্দীপ ঘোষকে ঘিরে রাজ্যের অস্বস্তি বাড়ছে ক্রমশ। আরজি করের ধর্ষণ ও খুনের মামলাতেও সন্দীপ ঘোষকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করল সিবিআই। আরজি কর মেডিক্য়াল কলেজ এবং হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপকে আগেই আর্থিক দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। আপাতত প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে আছেন তিনি। আর্থিক দুর্নীতি মামলায় জেল হেফাজতে থাকার সময়ই আরজি কর মেডিক্য়াল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসক (স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া) ধর্ষণ এবং খুনের মামলার তাঁকে ‘শোন অ্যারেস্ট’ দেখানো হল। সেইসঙ্গে টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকেও গ্রেফতার করেছে সিবিআই। সূত্রের খবর, তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগ এবং দেরিতে এফআইআর দায়ের করায় তাঁকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।