আরজি করে চিকিৎসক খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে সঞ্জয় রায়। তবে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার দাবি করে আসছে সে এই অপরাধ করেনি। বরং তার বিস্ফোরক অভিযোগ, আইপিএস অফিসাররা নাকি তাকে দিয়ে 'এই সব কথা' বলিয়েছেন। এই আবহে সঞ্জয়ের বোন অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, শিয়ালদা আদালতের রায়কে তারা উচ্চ আদালতে চ্যালেঞ্জ জানাবেন না। এরই সঙ্গে সঞ্জয়ের সাজা ঘোষণার আগে তার বোন দাবি করলেন, আরজি করের ঘটনায় আরও অন্য কেউ যদি জড়িত থাকে, তাহলে তদন্ত করে সেটা বের করা উচিত। (আরও পড়ুন: 'ছেলের ফাঁসি হোক…একা কাঁদব', আরজি করের নির্যাতিতাকে 'মেয়ের মতো' বললেন সঞ্জয়ের মা)
টাইমস অফ ইন্ডিয়র রিপোর্ট অনুযায়ী, শিয়লাদা আদালতে আজ আরজি কর মামলায় সাজা ঘোষণার আগে সঞ্জয়ের বোন বলেন, 'সঞ্জয় বড় হওয়ার পর মদ খেতে শুরু করেছিল। তবে তা ছাড়া ওর বিরুদ্ধে মেয়ে ঘটিত কোনও অভিযোগ আজও পর্যন্ত শুনিনি। অবশ্য আমরা ওর সঙ্গে থাকতাম না। তাই নিয়মিত যোগাযোগও ছিল না। গত কয়েক বছর ধরে ও অন্যত্র থাকত। তাই ও কেমন লোকেদের সঙ্গে মিশত, তা আমার জানা নেই। ও কোনও অপরাধের সঙ্গে যুক্ত কি না, সেটাও বলতে পারব না। এদিকে মিডিয়া রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল সঞ্জয় নাকি একা ছিল না। আমি আশা করছি যে তদন্ত খুব ভালো ভাবে হয়েছে। সেখান থেকেই বেরিয়ে এসেছে যে সঞ্জয় একাই এই অপরাধ ঘটিয়েছিল। যদি অন্য কেউ এই অপরাধের সঙ্গে সরাসরি বা প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করা উচিত।'
এর আগে সঞ্জয় একাধিকবার দাবি করে, সে নির্দোষ। শনিবারও সে আদালতে বলে, 'আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা আছে। আমি যদি ধর্ষণ করি, তাহলে সেটা ছিঁড়ে গেল না কেন?' শিয়ালদা আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস স্পষ্ট জানিয়ে দেন, যে প্রমাণ আছে, সেটার ভিত্তিতে সঞ্জয়কে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ) ধারা, ৬৬ ধারা (ধর্ষণের এমন আঘাত করা, যে কারণে মৃত্যু হতে পারে) এবং ১০৩ (১) ধারায় (খুন) দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে। তার সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি বা মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।
উল্লেখ্য, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সেমিনার রুম থেকে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পরদিনই সিভিক ভলান্টিয়াারকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ১৩ অগস্ট পুলিশের হাত থেকে আরজি কর ধর্ষণ ও খুনের মামলার তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। ৭ অক্টোবর শিয়ালদা আদালতে চার্জশিট পেশ করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয়কে মূল অভিযুক্ত করে সেই চার্জশিট পেশ করা হয়। এখনও পর্যন্ত সিবিআইয়ের তরফে ওই একটা চার্জশিটই দাখিল করা হয়েছে। কোনও সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দাখিল করেনি।