আরজি কর ইস্যুতে একাধিক বক্তব্য রাখতেন শান্তনু সেন। এর জেরে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পড়েছিল রাজ্য সরকার। এরপর তাঁকে তৃণমূলের মুখপাত্রের পদ থেকে সরানো হল। এরপর তাঁর নিরাপত্তাও তুলে নেওয়া হয়েছিল বলে খবর। আর এবার রোগী কল্যান সমিতির সরকারি প্রতিনিধি হিসাবে নাম নেই শান্তনু সেনের। কার্যত এবার ইঞ্চিতে- ইঞ্চিতে বলা ভালো স্কোয়ার ফুটে বদলা নিচ্ছে শাসকদল।
তবে যেটা বলা হচ্ছে গত ৯ সেপ্টেম্বর মুখ্য়মন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন সরকারি হাসপাতালগুলির রোগী কল্যাণ সমিতিতে সেই হাসপাতালের সুপার বা অধ্য়ক্ষ চেয়ারম্যান হবেন। কোনও নেতা শীর্ষপদে থাকবেন না। তবে এবার নেতারা কেবল সরকারি প্রতিনিধি হয়ে সাধারণত থাকবেন।
২৪টি মেডিক্যাল কলেজে রোগী কল্যাণ সমিতির পদে কিছু রদবদল হয়েছে বলে খবর। সেক্ষেত্রে এবার কোপে পড়লেন সুদীপ্ত-শান্তনু। শান্তনু সেন তিনিও রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান ছিলেন। এখন সরকারি প্রতিনিধি হিসাবে সেখানে এলেন সুপ্তি পান্ডে। তিনি মানিকতলা উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন। রোগী কল্যাণ সমিতির সরকারি প্রতিনিধির তালিকায় নাম নেই সুদীপ্ত রায়ের। এবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতিতে সরকারি প্রতিনিধি হিসাবে এলেন শশী পাঁজা।
রাজ্য সরকারের তরফে একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানেই একাধিক রদবদলের কথা জানা গিয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে সরকারের প্রতিনিধিত্বে কিছু বদল করা হয়েছে।
নতুন যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে এসএসকেএমের সরকারি প্রতিনিধি হিসাবে অরূপ বিশ্বাস,এনআরএসে সুপ্তি পান্ডে,আরজি করে অতীন ঘোষ, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে শশী পাঁজা,সাগর দত্তে মদন মিত্র,মালদা মেডিক্যালে কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে গৌতম দেবকে, ক্যালকাটা ন্যাশানাল মেডিক্যালে জাভেদ খান, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে খোকন দাস, বাঁকুড়া সম্মিলনীতে অরূপ চক্রবর্তী, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে অপূর্ব সরকার, রায়গঞ্জে কৃষ্ণ কল্যাণী, রামপুরহাটে আশিস বন্দ্যোপাধ্য়ায়, কোচবিহারে অভিজিৎ দে ভৌমিক ও আরামবাগে প্রফুল্লচন্দ্র সেন সরকারি মেডিক্যাল কলেজে মিতালি বাগকে রাখা হয়েছে।
এদিকে আরজিকর কাণ্ডের প্রতিবাদে বার বার সরব হয়েছিলেন শান্তনু। প্রকাশ্য়ে এমন কথা বলতেন যাতে অস্বস্তি বাড়ত সরকারের। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বদলির জন্যও চিকিৎসকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে টাকা। এমনই বিস্ফোরক অভিযোগও তুলেছিলেন তিনি। এই অভিযোগ উঠেছে এক চিকিৎসক নেতার বিরুদ্ধে। তৃণমূল নেতা তথা ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) রাজ্য সভাপতি নির্মল মাজি এবং শান্তনু সেন এই অভিযোগ তুলেছিলেন পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিলের পেনাল অ্যান্ড এথিক্যাল কমিটির সদস্য বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে।ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের প্যাডে ওই আধিকারিকের বিরুদ্ধে রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্যের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন দুই চিকিৎসক নেতা।
এদিকে রাজ্য তৃণমূলও একাধিক ক্ষেত্রে শান্তনু সেনের উপর বিরক্ত ছিল। রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ শান্তনু সেনের জন্য ২ জন নিরাপত্তারক্ষী বরাদ্দ ছিল। তাঁদেরও তুলে নেওয়া হয়েছিল বলে খবর। জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, শান্তনুবাবুর নিরাপত্তার দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়া হল তাদের। আর এবার কোপ পড়ল শান্তনু সেনের উপর। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি তৃণমূলের সঙ্গে ।যুক্ত। কিন্তু আরজিকর কাণ্ডে তিনি কিছুটা বেসুরো হয়ে গিয়েছিলেন। তারপরই একের পর এক কোপ।