বহু মানুষের নস্টালজিয়া এই হলুদ ট্যাক্সিকে ঘিরে। বহুজনের ছোটবেলা, যৌবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এই হলুদ ট্যাক্সি। কিন্তু সেই হলুদ ট্যাক্সির একাংশকে আগামী জানুয়ারিতে সরে যেতে হতে পারে কলকাতার বুক থেকে। গ্রীন ট্রাইবুনালের নির্দেশে সরে যেতে হতে পারে এই হলুদ ট্যাক্সির একাংশকে। তবে এনিয়ে মন খারাপ অনেকেরই। এই হলুদ ট্যাক্সির একাংশ সরে গেলে অনেকেরই পরিবারে কোপ পড়বে। রুটি রুজিতে টান পড়বে। এবার সেই হলুদ ট্যাক্সিকে বাঁচানোর দাবিতে রাস্তায় নামলেন শ্রমিকরা। আইএনটিইউসির নেতা কর্মীরা রাজরামমোহন সরণীতে এই হলুদ ট্যাক্সিকে বাঁচিয়ে রাখার দাবিতে বিক্ষোভ দেখান।
তাঁদের দাবি কলকাতার বহুগুণীজনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এই ট্যাক্সি। এগুলি কলকাতার ঐতিহ্যকে । সেই হলুদ ট্যাক্সিকে হারিয়ে যেতে দেব না। আইএনটিইউসি সেবাদলের সভাপতি প্রমোদ পাণ্ডে বলেন, ভারতের একমাত্র কলকাতায় এই হলুদ ট্যাক্সি চলে। এটা আমাদের ঐতিহ্য। আমরা রাস্তায় নেমেছি। হলুদ ট্যাক্সি বন্ধ করা চলবে না। এই হলুদ ট্যাক্সি যারা চালান তাঁরা কোথায় যাবেন? বিকল্প না করে এই হলুদ ট্যাক্সি বন্ধ করা যাবে না। সেই সত্যজিৎ রায়, উত্তমকুমার এই হলুদ ট্যাক্সি নিয়ে সিনেমা করেছেন। আর সেই হলুদ ট্যাক্সি কলকাতা থেকে তুলে দেওয়া হলে সেটা কিছুতেই মানব না।
অনেকে বলেন, কলকাতা আর হলুদ ট্যাক্সি একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে বহুকাল আগে।
তবে মূলত নিয়মের জাঁতাকলে পড়ছে হলুদ ট্যাক্সি। ১৫ বছরের বেশি সময়ের যানবাহন শহরের বুকে চালানো যাবে না। কারণ ১৫ বছরের বেশি সময়ের যানবাহন থেকে বায়ুদূষণ হয়। তাই সেসব বাতিল করতে হচ্ছে। হলুদ ট্যাক্সি এই পরিস্থিতিতে বন্ধ হওয়ার মুখে।
তবে হলুদ ট্যাক্সি নিয়ে কলকাতাবাসীর আবেগের বিষয়টি অনুভব করেছে রাজ্য সরকারও।
এদিকে ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্যাক্সি অপারেটার্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি'আগেই জানিয়েছিল অ্য়াম্বাস্য়াডর যখন আর নতুন করে পাওয়া যাবে না, তখন অন্য কোনও সংস্থার গাড়িকে 'হলুদ ট্যাক্সি' হিসাবে চালানোর অনুমতি দিক রাজ্য সরকার।
রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর হস্তক্ষেপ চেয়েছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্যাক্সি অপারেটার্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি। তবে সূত্রের খবর, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিবেশবান্ধব এবং অ্যাপনির্ভর হলুদ ট্যাক্সি চালু করার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার। যাকে এককথায় 'হলুদ অ্যাপক্যাব' বা 'হলুদ অ্যাপ টাক্সি' বলা যেতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত জল কোনদিকে গড়ায় সেটাই দেখার।