লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে এবার অনুষ্ঠিত হয়েছিল বাংলার দুই বিধানসভা আসনের উপনির্বাচন। গত ৪ জুন সেই উপনির্বাচনেরও ফলাফল প্রকাশিত হয়। বরানগর এবং ভগবানগোলা বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূলের সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রায়াত হোসেন সরকার। তবে উপনির্বাচনে জেতা তৃণমূলের এই দুই প্রার্থীরই এখনও বিধায়ক হয়ে ওঠা হল না। কারণ, তাঁদের শপথগ্রহণ হয়নি এখনও। তাই আনুষ্ঠানিক বা সরকারি ভাবে তাঁরা এখনও বিধায়ক হননি। রাজভবনের পদক্ষেপে তাঁদের শপথগ্রহণ নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। এই আবহে মঙ্গল দুপুরে রাজভবন থেকে শপথগ্রহণের আমন্ত্রণের চিঠি পাঠানো হয় সায়ন্তিকা এবং রায়াতকে। আর সেই চিঠি পেয়েই বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হন দু'জনে। শপথ নিয়ে তাঁদের পদক্ষেপ কী হওয়া উচিত, তা জানতেই মঙ্গল বিকেলে স্পিকারের দফতরে যান সায়ন্তিকা এবং রায়াত। (আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলা নিয়ে সামনে এল নয়া আপডেট, চিঠিতে করা হল বড় দাবি)
গত ৪ জুন ফল প্রকাশের পর প্রায় তিন সপ্তাহ অতিক্রান্ত। লোকসভায় সাংসদরা পর্যন্ত শপথগ্রহণ করে ফেলেছেন। তবে বরানগর এবং ভগবানগোলা উপনির্বাচনে জিতেও সায়ন্তিকারা এখনও শপথ নিতে পারলেন না বিধায়ক হিসেবে। কারণ, সায়ন্তিকারা কোথায় শপথ নেবেন তা নিয়ে টানাপড়েন চলছে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে। এই আবহে বিধানসভাকে অবগত না করেই শপথের জন্যে সায়ন্তিকাদের সরাসরি চিঠি পাঠিয়েছে রাজভবন। এরপরে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যয় 'সাংবিধানিক বিধি' মনে করিয়ে পালটা চিঠি লেখেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে। পরে সায়ন্তিকারাও রাজ্যাপালকে চিঠি লিখে জানান, রাজভবনে নয়, বরং বিধানসভায় স্পিকারের কাছেই বিধায়ক হিসেবে শপথ নিতে চান তাঁরা।
তবে এসবের মাঝে মঙ্গলে রাজভবনের তরফ থেকে একটি বিবৃতি পেশ করে জানানো হয়, রাজ্যের বিধায়কদের শপথ গ্রহণের ব্যাপারে রাজ্যপালই শেষ কথা বলবেন। এই আবহে বুধবার দুপুর ১২টা নাগাদ বিধায়ক হিসাবে শপথ নেওয়ার জন্য সায়ন্তিকাদের চিঠি পাঠায় রাজভবন। এই পরিস্থিতিতে বিধানসভাকে এড়িয়ে রাজভবনের পক্ষ থেকে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের সময় নির্ধারণের বিষয়টিকে ভাল চোখে দেখছে না শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। এদিকে রাজভবন থেকে চিঠি পাওয়া নিয়ে সায়ন্তিকা বলেন, ‘আমি বিধায়ক হিসাবে নির্বাচিত হয়েছি। কিন্তু শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমার পরিবারের সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। আমার কাছে এটা বেদনার। আর উপনির্বাচনে জয়ের ক্ষেত্রে স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকারকে শপথগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দায়িত্ব দেন রাজ্যপাল। কিন্তু সেটা করা হল না। আর বিধানসভাকে কিছু না জানিয়ে সরাসরি আমাকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আমি যাব না।’