ঘূর্ণিঝড় আমফান গেলেও এখনো স্তব্ধ দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা। ঝড়ের তীব্রতা দেখে বিহ্বলতা কাটেনি অনেকের। প্রকৃতির এমন তাণ্ডব শেষ কবে দেখেছিলেন তা মনে করতে পারছেন না কেউ। স্থানীয়ভাবে ঝড়ের প্রকোপ নয়, একের পর এক জেলা তছনছ করে এগিয়েছে আমফান। আবহাওয়াবিদ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব এখনো দেখা বাকি রয়েছে বিশ্ববাসীর। বিশ্ব উষ্ণায়ন যত বাড়বে তত বাড়বে ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা। যাতে আরও ঝুঁকি বাড়বে উপকূলে।
দ্যা গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে গবেষকরা বলছেন, ১৯৭৯ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়গুলি। একের পর এক রেকর্ড ভেঙে চলেছে তারা। বিশেষ করে ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার বা তার বেশি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়গুলি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে শক্তি সংগ্রহ করে ঘূর্ণিঝড়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা যত বাড়বে ততই বাড়বে ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা। জলবায়ু বিশেষজ্ঞ হামিশ রামসে জানিয়েছেন, ‘জলবায়ুর প্রকল্পগুলি বলছে উষ্ণায়ণ যত বাড়বে তত তীব্র হবে ঝড়গুলি।’ পরিসংখ্যান অনুসারে ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটারের বেশি বাতাসের গতি সম্পন্ন ঝড়গুলির তীব্রতা গত ৩৯ বছরে ১৫ শতাংশ বেড়েছে।
শুধু তাই নয়, উষ্ণায়ণের জেরে শুধু ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের গতিবেগই বাড়বে না, বাড়বে বৃষ্টির পরিমানও। সঙ্গে ধীরে ধীরে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের গতি কমছে বলেও দেখেছেন বিশেষজ্ঞরা। যার ফলে দীর্ঘ সময় সমুদ্রের ওপর থাকছে ঝড়। শোষণ করছে বেশি শক্তি।
গবেষকদের পর্যবেক্ষণ থেকে স্পষ্ট, আগামী দিনে আরও শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের অপেক্ষায় থাকতে হবে উপকূলের বাসিন্দাদের।