রাজ্যজুড়ে থিমের লড়াইয়ে জমজমাট দুর্গাপুজো। সেখানে খোদ দক্ষিণ কলকাতার বুকে দুই বিগ বাজেটের পুজো কমিটিকে কার্যত টেক্কা দিল সাবেকিয়ার দুর্গোৎসব কমিটি। যা রীতিমতো চর্চায় উঠে এসেছে। মুদিয়ালি ক্লাব এবং শিব মন্দির বরাবর থিমের পুজো করে নজর কেড়েছে। এমনকী বহুবার পুরষ্কৃতও হয়েছে। সেখানে ৩৮ বছর ধরে সাবেকিয়ানার পুজো করে গিয়েছে সেবক সংঘ। আর এবার এই দুই বিগ বাজেটের দুর্গাপুজোর মাঝে সেবক সংঘ বুঝিয়ে দিল ‘ওল্ড ইজ গোল্ড’।
ঠিক কী ঘটেছে দক্ষিণ কলকাতায়? একদিকে মুদিয়ালি ক্লাবের দুর্গাপুজো। অন্যদিকে শিব মন্দির। আর তাদের মাঝে রয়েছে সেবক সংঘ। এখানের রাস্তার নাম লেক অ্যাভিনিউ। বরাবর সাবেকি ধাঁচে পুজো হয়ে আসলেও এবার বিশেষ আকর্ষণ দেখা গিয়েছে এই পুজোতে। শিল্পের কারুকাজ থেকে মায়ের মৃন্ময়ী মুখ তুলে ধরা হয়েছে এখানে। গোটা পুজোমণ্ডপ চুড়ি দিয়ে করা হয়েছে। যা দেখে উৎসাহিত দর্শণার্থীরা। এমনকী চতুর্থী থেকেই এই পুজোমণ্ডপে মানুষের ঢল নেমেছে। দেদার সেলফি থেকে ফটো সেশন এখানে দাঁড়িয়ে করছেন নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা। দু’পাশে দুটো বিগ বাজেটের পুজোর মাঝে সেবক সংঘ ভিড় টানায় আলোচনা শুরু করে দিয়েছেন শিব মন্দির–মুদিয়ালি ক্লাবের উদ্যোক্তারা।
আর কী জানা যাচ্ছে? শিব মন্দির এবং মুদিয়ালি ক্লাবে পুজো উদ্বোধন করেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে সেবক সংঘের পুজো উদ্বোধন করতে দু’একবার রাজ্যপাল এলেও তা প্রচারের আলোয় আসেনি। সেখানে বেসরকারি সংবাদমাধ্যমের শারদ সম্মান পেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে তারা। এই ক্লাবের সদস্য তথা কর্পোরেট যুবক রাজীব বোস বলেন, ‘এই পুজো নিয়ে ছোট থেকে একটা আবেগ ছিল। কিন্তু কর্মসূত্রে এতটাই চাপ থাকে যে পুজোয় মন দিতে পারতাম না। এবার পুজোয় চাপটা কম থাকায় সবার সঙ্গে কথা বলে কাজে নেমে পড়লাম। আগে পাড়ার পুরনো বন্ধুদের ফোন করে একছাতার তলায় আনলাম। তারপর ক্লাবের বড়দের কথা অনুযায়ী কাজ করতে শুরু করলাম। আর এই সাফল্য আমাদের উৎসাহ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিল।’
কী বলছেন সেবক সংঘের উদ্যোক্তা? এই পুজো কমিটির উদ্যোক্তার নাম মৃণালকান্তি দাস। তিনি বলেন, ‘আমরা কোনও প্রতিযোগিতার লড়াইয়ে ছিলাম না। আমরা শুধু মন দিয়ে পুজোটা করি। চেষ্টা করি যতটা ভাল করা যায়। পাড়ার ছেলেমেয়েরা এই পুজোয় যুক্ত। তাতে একটা অক্সিজেন পাই। বড়দের আশীর্বাদ সঙ্গে রয়েছে। এবারও সাবেকি ধাঁচেই পুজোমণ্ডপ থেকে প্রতিমা সবই করা হয়েছে। আর যে সম্মান এবার আমরা পেলাম তাতে পুজো করার উৎসাহ আরও বেড়ে গেল।’