'শক্তি' সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান্টের পীঠস্থান হচ্ছে কলকাতা। আনুষ্ঠানিকভাবে তাতে সিলমোহর দিল কেন্দ্রীয় সরকার। নরেন্দ্র মোদীর মার্কিন সফরের শেষে ভারতের সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, কলকাতায় যে সেমিকন্ডাক্টর ফ্যাব প্ল্যান্ট তৈরি করা হচ্ছে, সেটার নাম হচ্ছে 'শক্তি'। কী কারণে সেই নাম রাখা হয়েছে, তা অবশ্য় বিস্তারিতভাবে জানানো হয়নি। তবে মোদী সরকারের আমলে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের নামে ‘শক্তি’ রাখা হয়েছে। আর সেই ধারা অব্যাহত থাকল কলকাতার স্বপ্নের সেমিকন্ডাক্টর ফ্যাব প্ল্যান্টের ক্ষেত্রেও। যাতে বিনিয়োগ করবে বিশ্বের প্রথমসারির সেমিকন্ডাক্টর সংস্থা গ্লোবাল ফাউন্ডারিজ। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, ওই সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান্ট চালু হলে পশ্চিমবঙ্গের ছবিটাই পালটে যাবে। ইতিবাচক প্রভাব পড়বে পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতিতে। আসবে বিশ্বের আরও বড়-বড় সংস্থা। তৈরি হবে প্রচুর কর্মসংস্থান।
কলকাতার সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান্টে কী তৈরি হবে?
ভারত সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, কলকাতার প্ল্যান্টে অত্যাধুনিক গ্যালিয়াম নাইট্রাইড সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন করা হবে। সেইসঙ্গে ইনফ্রার্ড এবং সিলিকন কার্বাইড সেমিকন্ডাক্টরও তৈরি করা হবে কলকাতায়। জোর দেওয়া হবে অত্যাধুনিক সেন্সিং, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং পাওয়ার ইলেকট্রনিক্সের উপরে।
মঙ্গলবার ভারত সরকারের তরফে বলা হয়েছে, ‘সেমিকন্ডাক্টর (ক্ষেত্রে) যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে হাতে হাত মিলিয়েছে ভারত এবং আমেরিকা। কলকাতায় সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনকারী প্ল্যান্ট চালু করছে মার্কিন মিলিটারি (মার্কিন স্পেস ফোর্স) এবং ভারত। (যে প্রকল্পে অংশীদার হচ্ছে) ইন্ডিয়া সেমিকন্ডাক্টর মিশন। সেই প্ল্যান্টে আধুনিক সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন করা হবে।’
ভূ-রাজনৈতিকভাবেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কলকাতার প্ল্যান্ট
আর সত্যিই যুগান্তকারী হতে চলেছে কলকাতার সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান্ট। কারণ ভূ-রাজনৈতিক দিক থেকে বিচার করলে 'শক্তি' সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান্টের মাহাত্ম্য অপরিসীম। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, বর্তমানে সারা বিশ্বে মোট যত পরিমাণ চিপ তৈরি করা হয়, সেটার অর্ধেকের বেশি হয় চিনেই।
কিন্তু চিনের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণে অনেকেই বিকল্প ‘ইকো-সিস্টেম’-র সন্ধানে আছে বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের। ওই সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, সেই পরিস্থিতিতে কলকাতার সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ‘ডেস্টিনেশন’ হয়ে উঠতে পারে। যা পশ্চিমবঙ্গের শিল্পের ছবিটা একেবারে পালটে দিতে পারে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
কলকাতার সেমিকন্ডাক্টরের ‘ডেস্টিনেশন’ করার লক্ষ্য
আর কলকাতাকে সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান্টের ‘ডেস্টিনেশন’ করে তোলার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে সবরকমের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে আহ্বান জানিয়েছেন যে পশ্চিমবঙ্গকে এরকম শিল্পক্ষেত্রের ‘ডেস্টিনেশন’ করে তুলতে কোনও কসুর ছাড়া হবে না।