কর্মবিরতি চলছে। জুনিয়র চিকিৎসকরা নাকি রোগী দেখছেন না? এমন দাবি বিভিন্ন মহল থেকে করা হচ্ছে। কিন্তু স্বাস্থ্যভবনের সামনে একেবারে ভিন্ন ছবি। আন্দোলন চলছে। চারদিকে নানা ধরনের স্লোগান লেখা রয়েছে। কেউ ঢাক বাজাচ্ছেন। কেউ আবার বোতল বাজাচ্ছেন। প্রতিবাদের স্লোগান চলছে। তার মধ্য়েই জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ নিজের নিজের ডিউটি করে যাচ্ছেন। কেউ সকাল থেকে চা বিতরণ করছেন। কেউ খাবার গুছিয়ে রাখছেন। কেউ আবার চারপাশটা পরিস্কার করছেন। কেউ হ্যান্ড মাইকে মানুষকে সচেতন করছেন। আর কেউ আবার স্টেথো গলায় ঝুলিয়ে রোগী দেখছেন। হ্যাঁ ঠিকই পড়ছেন ধর্নাস্থলে রোগী দেখছেন চিকিৎসকরা।
মাথার উপর ফ্যান নেই। কোনওরকমে তাঁবু টাঙানো। সেখানে বস দরদর করে ঘামছেন চিকিৎসকরা। তার মধ্যেই চলছে রোগী দেখা। একের পরে এক রোগীর চিকিৎসা করছেন চিকিৎসকরা।
পাশেই ডাইঁ করে রাখা রয়েছে ওষুধ। সেখান থেকে ওষুধ বিলি করছেন দুজন ডাক্তারি পড়ুয়া। একেবারে অন্যরকম ছবি।
দুজন মহিলা চিকিৎসক এক মনে রোগী দেখছিলেন। ফ্যানের হাওয়া নেই। সেখানেই বসে আছেন তাঁরা। প্রশ্ন করতেই বললেন, আসল যোদ্ধা তো ওরা( জুনিয়র ডাক্তাররা)। আমরা শুধু পাশে আছি। বলছি তোমরা এগিয়ে যাও। আমরা সবরকমভাবে পাশে আছি। ওরা রোজকার লড়াইটা করছে। আমরা ওদের পাশে।
বহু সাধারণ মানুষ খাবার নিয়ে আসছেন ধর্নাস্থলে। যার যেমন ক্ষমতা তেমন খাবার নিয়ে আসছেন তাঁরা। এক জুনিয়র ডাক্তার একে একে খাবার গুছিয়ে রাখছেন তিনি। যাঁরা খাবার নিয়ে এসেছেন তাঁরা বলে চলেন, দিদি আপনারা লড়াই চালিয়ে যান। রাতদিন আমরা আপনাদের পাশে আছি। কোনও চিন্তা করবেন না।
কৃতজ্ঞতায় ভরে ওঠে জুনিয়র চিকিৎসকের মুখ। তিনি বলেন, জানেন আপনারা পাশে আছেন বলেই এত ভরসা পাই। না হলে ওরা যা খুশি করতে পারত। সিনিয়ররা একেবারে দাদা-দিদির মতো পাশে রয়েছেন। আমরা সকলের কাছে কৃতজ্ঞ। সকলের জন্যই আমরা এই লড়াইটা চালিয়ে যেতে পেরেছি। না হলে হয়তো এত বড় শক্তির সঙ্গে আমরা লড়াইটা চালাতে পারতাম না।
তবে শিরদাঁড়া সোজা করে কীভাবে দুর্নীতির কারবারীদের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে লড়তে হয় তা যেন রোজ শেখাচ্ছে স্বাস্থ্যভবনের সামনের ওই ধর্নাস্থল। জ্বল জ্বল করে লাল দিয়ে লেখা স্লোগান, শোক নয় দ্রোহ। ঘুষের বাজেট এত কম, শুধু চা দিয়ে কিনবে দম!