কাটিহার এক্সপ্রেসে তবলাবাদক খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সিরিয়াল কিলার রাহুল ওরফে ভোলু কর্মবীর জাঠকে হাওড়ায় আনল রেল পুলিশ। তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার রেল পুলিশের একটি বিশেষ দল হাওড়ায় নিয়ে আসে। আজ বৃহস্পতিবার ধৃতকে হাওড়া আদালতে তোলার কথা রয়েছে। সেখানে হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানাবে রেল পুলিশ। এর পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দারা ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে বলে জানা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: হাওড়ায় ট্রেনের কামরা থেকে উদ্ধার রক্তাক্ত দেহ, রয়েছে আঘাতের চিহ্ন, তদন্তে GRP
গুজরাট পুলিশ এক তরুণীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে সিরিয়াল কিলার রাহুলকে গ্রেফতার করেছিল। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছিল কাটিহার এক্সপ্রেসে তবলা বাদক সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে খুনের ঘটনায় সে জড়িত। শুধু তাই নয় ২৫ দিনের মধ্যে বিভিন্ন ট্রেনে পাঁচটি খুন করেছে সে। এরপরে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গুজরাটে রওনা দেয় রেল পুলিশের একটি দল। গুজরাটে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে হাওড়ার রেল পুলিশের তরফ সেখানকার আদালতে তুলে ট্রানজিট রিমান্ডে ধৃতকে বিমানে করে কলকাতায় আনা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদে ট্রেনের সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া একাধিক খুন, ধর্ষণ সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। হাওড়া রেল পুলিশের সুপার জানিয়েছেন, খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্পষ্ট। তবে একাধিক তথ্য প্রমাণের জন্য অপরাধীকে হেফাজতে নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৯ নভেম্বর রাতে কাটিহার এক্সপ্রেসের বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্নদের কামরায় চড়ে বাড়ি ফিরছিলেন তবলা বাদক। সেই সময় তাকে খুন করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রেল পুলিশ জানতে পেরেছে, তবলাবাদককে খুনের পর পুনরায় মালদায় ফিরে যায় সে। এরপর সেখানে হাওড়াগামী একটি ট্রেন ধরে হাওড়া স্টেশনে নামে। সেখান থেকে খড়গপুর পৌছয়। তবে এরপর কোন ট্রেন ধরে সে রাজ্যের বাইরে গিয়েছে তা পরিষ্কার হচ্ছে না তদন্তকারীদের কাছে। সেই সমস্ত তথ্য জানার পাশাপাশি ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে।অভিযুক্তকে জেরা করে ইতিমধ্যেই রাজ্যের রেল পুলিশ মালদা থেকে শুরু করে সব শুরু করে এই রুটে থাকা সব স্টেশনের সিসিটিভি দুবার খতিয়ে দেখেছে। সেই সঙ্গে হাওড়ার সিসিটিভিও খতিয়ে দেখা হয়েছে। কিন্তু কোথাও তার উপস্থিতি চোখে পড়েনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫ বছর বয়সে বাড়ি ছেড়ে পালায় রাহুল। এরপর থেকেই অপরাধ মূলক কাজকর্মে জড়িয়ে পড়ে। গাড়ি বা সাইকেল চুরি বা ছিনতাই করত। পায়ে সমস্যা থাকায় বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্নদের কামরায় গোটা দেশে ঘুরে বেড়াত সে। পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার বিকেলে তাকে বিমানে করে কলকাতা হয়ে হাওড়ায় আনা হয় । এই খুনের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী অরূপ রায়। তিনি সিরিয়াল কিলারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।