জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের 'মাথায়' আছেন বামপন্থী এবং অতিবামপন্থী চিকিৎসকরা। এমনই অভিযোগ করে এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার যেন সেই সুরেই আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করল সার্ভিস ডক্টর্স ফোরম। সংগঠনের তরফ থেকে ডঃ সজল বিশ্বাস বলেন, 'আড়াই ঘণ্টা মুখ্যমন্ত্রী বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে ভিজেছেন। বার বার অনুরোধ করেছেন। অন্তত সৌজন্য-ভদ্রতা দেখিয়ে আলোচনায় বসতে পারত জুনিয়ররা। কিন্তু সেই পথেই হাঁটেনি তাঁরা। অত্যন্ত হতাশাজনক।' এদিকে এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে ডঃ রুমেলিকা কুমার, ডঃঅর্ণব মুখোপাধ্যায়ের মতো 'অতি বাম' হিসেবে পরিচিত চিকিৎসকদের দিকে। যদিও ডঃ সজল ঘোষের এই হতাশা শোনা গিয়েছিল গতকালকের সেই ৩৪ জন চিকিৎসকের গলাতেও। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে চাইলেও তাঁদের অভিযোগ, ডাক্তারদের ফিরিয়ে দেন মুখ্যসচিব এবং স্বাস্থ্যপ্রতিমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসার জন্য তাঁরা যে কতটা নমনীয় হয়েছিলেন, সেটা জানিয়ে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা বলেছিলেন, 'শেষে আমরা শুধু বৈঠকের কার্যাবিবরণী নথিভুক্ত করার প্রস্তাবেও রাজি ছিলাম। (আর্জি ছিল) যে কথা বলুন, কথা বলুন আমাদের সঙ্গে। আমাদের এসে বিচারটা দিন। এই বিচারের রাস্তায় আমাদের কিছুটা আশার আলো দেখান। তাও ওঁনারা ওটা শুনলেন না।' এদিকে তাঁকে দেখে জলের চোখ সামলাতে পারেননি অপর এক জুনিয়র ডাক্তার। তিনি বলেন, ‘বললেন যে তোমরা নিজেরা চলে যাও। নাহলে বাস ডেকে দিচ্ছি। আমাদের বললেন যে তোমাদের আর এখানে দাঁড়িয়ে থেকে কোনও লাভ নেই। অনেক সময় পেরিয়ে গিয়েছে। তোমরা ভিতরে এসো। নাহলে বাসে যাও।’ তারইমধ্যে প্রথম জুনিয়র ডাক্তার বলেন, ‘আমাদের মুখের উপর দিয়ে ওঁনারা গাড়ি নিয়ে চলে গেলেন। বললেন যে বাস ডেকে বেরিয়ে যাও।’
হাউ-হাউ করে কাঁদতে-কাঁদতে তিনি আরও বলেন, ‘ম্যাডামের (মুখ্যমন্ত্রী) সম্মান রেখে আমরা সবকিছু মানতে রাজি ছিলাম। ম্যাডামের চেয়ারের রেসপেক্টের জন্যই আমরা সবকিছু মানতে রাজি ছিলাম। আমরা এটাও মেনে নিয়েছিলাম যে ঠিক আছে, ভিডিয়ো করতে হবে না। আমরা আপনার উপরে ভরসা রাখছি। আপনার অনুরোধ রেখে আপনার কাছে যাচ্ছি আমরা। আপনি শুধু আমাদের দাবিগুলি শুনে কিছু সুরাহা করে দিন। এটুকুই তো শুধু আমাদের দাবি ছিল।’ সেইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শেষে বললেন, উনি তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করেছেন। আর অপেক্ষা করবেন না। আমরা ৩৫ দিন ধরে অপেক্ষা করছি। আমরা জানি না যে (আগামিদিনে) কী হবে। আমরা প্রচণ্ড হতাশ। আমরা এখনও বসতে চাই। আমরা এখনই বসতে চাই।’