সেক্সটরশনের ফাঁদে পড়ে কলকাতায় আত্মঘাতী হলেন এক যুবক। এমনই দাবি করেছে পরিবার। ওই যুবকের পরিবারের দাবি, যুবকের কাছে সেক্সটরশনের ফোন আসছিল। একদফায় টাকা দিতে বাধ্য হয়েছিলেন যুবক। তারপরও চলতে থাকে ব্ল্যাকমেল। তার জেরে ওই যুবক আত্মঘাতী হয়েছেন বলে দাবি করেছে পরিবার।
দুর্গাপুজোর দ্বাদশীতে (৭ অক্টোবর) আত্মহত্যা করেন হরিদেবপুরের এক যুবক। পরিবারের সদস্যদের দাবি, ওই যুবকের বন্ধুর থেকে জানতে পারেন যে একটি অজানা নম্বর থেকে ভিডিয়ো কল এসেছিল। সেই ভিডিয়ো কল ধরার পর থেকেই ব্ল্যাকমেল করা শুরু হয়েছিল। টাকা চেয়ে দিল্লি পুলিশের নামে ওই যুবকের কাছে ফোন আসত। অশ্লীল ভিডিয়োর ভয় দেখিয়ে যুবকের থেকে টাকা চাওয়া হত বলে অভিযোগ পরিবারের।
যুবকের পরিবারের দাবি, ব্ল্যাকমেলের জেরে বাধ্য হয়ে একবার টাকাও দিয়েছিলেন ওই যুবক। সেজন্য বন্ধুর (যে বন্ধু পুরো ঘটনাটি জানিয়েছেন, তিনি টাকা দিয়েছিলেন) থেকে ৬,৫০০ টাকার মতো ধার করেছিলেন। তারপরও টাকার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। অশ্লীল ভিডিয়ো নিয়ে ভয় দেখিয়ে আসছিল ফোন। ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছিল। সেই ব্ল্যাকমেলের চাপেই ওই যুবক আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছে পরিবার।
বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন হরিদেবপুরের ওই যুবকের পরিবার। সেক্সটরশনের ফোন আসছিল বলে অভিযোগ দায়ের করা হয়েচে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, ব্ল্যাকমেলের পিছনে ‘ভরতপুর গ্যাং’-এর হাত থাকতে পারে। বছরদেড়েক আগে কলকাতার এক ব্যক্তির আত্মহত্যার ঘটনাতেও ওই গ্যাংয়ের নাম জড়িয়েছিল। ইতিমধ্যে ওই গ্যাংয়ের পান্ডাদের ধরতে ময়দানে নেমেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত বছরের গোড়ার দিকে আত্মহত্যা করেছিলেন নারকেলডাঙার নর্থ রোড এলাকার এক যুবক। যিনি এক জনপ্রিয় টলিউড অভিনেতার ব্যক্তিগত সহকারী ছিলেন। মৃত যুবকের পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছিল যে হোয়্যাটসঅ্যাপ চ্যাট ঘেঁটে জানা গিয়েছিল, ওই যুবকের কাছে একটি ভিডিয়ো কল এসেছিল। এক তরুণী কল করেছিল। ভিডিয়ো কলের ফাঁকেই বিবস্ত্র হয়ে গিয়েছিল। তারপর থেকে টাকা চেয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। একাধিকবার টাকা দিতে বাধ্য হয়েছিলেন ওই যুবক। কিন্তু তারপরও বন্ধ হয়নি হুমকি কল। তার জেরে ওই যুবক আত্মহত্যা করেন বলে দাবি করেছিল পরিবার।
কীরকম ভাবে ফোন আসে?
সাইবার বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আপনার ফোনে ভিডিয়ো কল করা হয়। সেই ভিডিয়ো কল ধরলেই কোনও পুরুষ বা মহিলা চলে আসে। কিছুক্ষণ পরেই আচমকা জামাকাপড় খুলে ফেলছে অপরপ্রাপ্তের পুরুষ বা মহিলা। যে ব্যক্তির কাছে ফোন আসছে, তাঁর স্ক্রিনশট তুলে রাখা হচ্ছে। সেটাই পরে বিকৃত করে পর্নের ক্লিপের সঙ্গে জুড়ে দিচ্ছে অভিযুক্তরা। তারপর তোলাবাজির মতো লাগাতার টাকার চাপ দিয়ে যাচ্ছে।