টানা ২ সপ্তাহের ওপর লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদের পর দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে। আর গতরাতে সন্দীপ গ্রেফতার হন খুনের মামলায়। আর সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারির খবর প্রকাশিত হতেই ফের সরব হন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ শান্তনু সেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় শান্তনু এই নিয়ে লেখেন, 'আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত লোকটার বিরুদ্ধে প্রথমে সরব হয়েছিলাম আমি। সঠিক ছিলম, তা ঈশ্বর আজ আরও একবার প্রমাণ করলেন।' (আরও পড়ুন: 'এটা ঘাড় ধাক্কা?' কালীঘাটে বৈঠক ভেস্তে যাওয়ায় ডাক্তারদের তোপ দেগে বিস্ফোরক TMC)
আরও পড়ুন: 'লাইনে এরপর… তাই চন্দ্রিমাকে CM বলেন', কালীঘাটের বৈঠক নিয়ে উঠল বিস্ফোরক অভিযোগ
আরও পড়ুন: 'কান টানলে…', আরজি কর ধর্ষণ-খুন মামলায় সন্দীপ গ্রেফতার হতেই বিস্ফোরক চিকিৎসকরা
এর আগে ২০২৩ সালের প্রথম দিকে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদ থেকে সুদীপ্তকে সরিয়ে সেখানে বসানো হয়েছিল তৃণমূলের চিকিৎসক-নেতা শান্তনু সেনকে। পরে অবশ্য অক্টোবরে ফের শান্তনুকে সেই পদ থেকে সরানো হয়। ফিরিয়ে আনা হয় সুদীপ্তকেই। উল্লেখ্য, গতবছর দুর্নীতির অভিযোগ উঠতেই সন্দীপ ঘোষকে আরজি কর থেকে মুর্শিদাবাদে সরানো হয়েছিল। সেটা সেপ্টেম্বর। পরে অবশ্য সন্দীপকে ফের আরজি করের অধ্যক্ষ পদেই বহাল রাখা হয়। যা নিয়ে জলঘোলা হয়েছিল। এর পরপরই শান্তনুকে রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি পদ থেকে সরানো হয়েছিল। এদিকে আরজি করের সাম্প্রতিক ঘটনায় শান্তনু 'পার্টি লাইন' থেকে বাইরে এসে বেনজির ভাবে আক্রমণ শানিয়েছিলেন আরজি করের প্রশাসনিক পদে থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। এই আবহে দলের কোপও পড়েছে তাঁর ওপরে। তবে তিনি 'বিদ্রোহের পথ' ছাড়েননি।
আরও পড়ুন: আরজি কর খুনের মামলায় সন্দীপ-অভিজিৎ গ্রেফতারির পর মুখ খুললেন কুণাল, বার্তা CBI-কে
এদিকে ইতিমধ্যেই আরজি করের দুর্নীতি মামলায় জেলে আছেন সন্দীপ ঘোষ। এহেন সন্দীপকে গতকাল গ্রেফতার করা হয় আরজি করের ধর্ষণ ও খুনের মামলাতেও। সেইসঙ্গে টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকেও গ্রেফতার করেছে সিবিআই। রিপোর্ট অনুযায়ী, তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগ এবং দেরিতে এফআইআর দায়ের করায় তাঁদের গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। প্রসঙ্গত, গত ৯ অগস্ট আরজি কর মেডিক্য়াল কলেজ এবং হাসপাতালের সেমিনার রুম থেকে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়েছিল। এবং তারপর থেকেই এই ঘটনায় সন্দীপের ভূমিকা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছিল। এমনকী কুণাল ঘোষ নিজে সিবিআই দফতরে গিয়ে বেশ কিছু নথি সিবিআই-এর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। এদিকে হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল সন্দীপকে। বিশেষত কেন তিনি এফআইআর দায়ের করেননি, তা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছিল। এই আবহে সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শেষ শুনানিতে সিবিআই-এর মুখবন্ধ খামের রিপোর্ট পড়ে প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেছিলেন, 'আরজি কর থেকে সন্দীপের বাড়ি কতক্ষণের পথ?' সিবিআই রিপোর্টের বিষয়বস্তু বাইরে না এলেও খুন এবং ধর্ষণের মামলায় সন্দীপ যে সিবিআই নজরে ছিল, তা স্পষ্ট হয়ে দিয়েছিল তখনই। আর শেষ পর্যন্ত এই মামলায় গতকাল গ্রেফতার হলেন সন্দীপ ঘোষ।