বেশি রাতে নয়াদিল্লিতে পৌঁছেছেন রাজ্য–রাজনীতির চাণক্য মুকুল রায়। হঠাৎ তাঁর এই সফর নিয়ে সরগরম রাজনীতির ময়দান। নানারকম গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছে। কিন্তু বাবার এই গোপনে নয়াদিল্লি সফরের নেপথ্যে টাকার খেলা আছে বলে মনে করেন ছেলে শুভ্রাংশু রায়। এমনকী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কালিমালিপ্ত করতে বাবাকে নিয়ে নোংরা রাজনীতি করা হচ্ছে বলে ছেলে মনে করেন। শুভ্রাংশুর বিস্ফোরক দাবি, সোমবার একটি এজেন্সির পক্ষ থেকে এক অবাঙালি ব্যক্তিকে বলা হয়েছে, মুকুল রায়ের হাতে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে আসতে।
তারপর ঠিক কী ঘটল? এদিকে সোমবার সন্ধ্যায় হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক। মুহূর্তের জন্য তাঁকে দেখা যায় কলকাতা বিমানবন্দরে। তারপর সটান নয়াদিল্লি। বাবার ‘নিখোঁজ’ হওয়ার নিয়ে মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে শুভ্রাংশু বলেন, ‘আমি এয়ারপোর্ট এবং থানাকে চিঠি লিখেছি। দু’জন ব্যক্তি আমাকে না জানিয়ে বাবাকে নিয়ে চলে গিয়েছে। আমি থানার আইসি এবং বিমানবন্দরের ম্যানেজারকে বলেছিলাম বাবাকে বিমান থেকে নামিয়ে আনতে। কিন্তু সেটা হয়নি। আমার ব্যক্তিগত মত, অভিষেককে কালিমালিপ্ত করতে একটি রাজনৈতিক দল খেলায় নেমেছে। কারণ অভিষেক দলটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।’
আর কী বলেছেন শুভ্রাংশু? অন্যদিকে এখন বাবা মুকুল রায় অসুস্থ। ওষুধ–ইঞ্জেকশন চলছে। তার মধ্যে মুকুল রায়ের অন্তর্ধান নিয়ে শুভ্রাংশু বলেন, ‘মুকুল রায় মানসিকভাবে সুস্থ নন। এখানে টাকার খেলা হয়েছে। সোমবার একটি এজেন্সির পক্ষ থেকে এক অবাঙালি ব্যক্তিকে বলা হয়, মুকুল রায়ের হাতে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে আসতে। বাবার হাতে টাকা নেই। এখন বাবার মাসিক আয় ২১ হাজার টাকার মতো। সেখানে এমন ঘটনা ঘটল। এখনও বাবার সঙ্গে আমার কোনও যোগাযোগ হয়নি। উনি ইনসুলিন নিচ্ছেন কি না জানি না। বাবা দিনে ১৮টি ওষুধ খান।’
অভিযোগের আঙুল কি বিজেপির দিকে? বিজেপির টিকিটে একুশের নির্বাচনে জয়ী হয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে আসেন। তাতে বেশ চাপে পড়ে যায় গেরুয়া শিবির। এবার হঠাৎ তাঁর নয়াদিল্লি যাত্রার খবর প্রকাশ্যে আসতেই গুঞ্জন শুরু হয়েছে। কৈলাস খোঁজে কি নয়াদিল্লিতে মুকুল? বিজেপিতে কি ফের যোগ দেবেন? এইসব প্রশ্ন উঠতে সুরু করেছে। আর সেখানে শুভ্রাংশুর কথায়, ‘একটা সুস্থ মানুষের বিজেপিতে যোগ দেওয়া, আর মানসিকভাবে সুস্থ নয় এমন একজন মানুষের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার মধ্যে আকাশ–পাতাল ফারাক রয়েছে। আমার কাছে মেডিক্যাল রিপোর্ট আছে। বাবা হাঁটতে পারছেন না ভাল করে।’