মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় রাজ্যের মুখ্য়মন্ত্রী। তবে কেবলমাত্র বাংলায় নয়, ভিনরাজ্য়ের বহু রাজনীতিবিদ তথা সাধারণ মানুষের কাছেও তিনি দিদি বলেই পরিচিত। এমনকী ভোটের আগে বাংলায় প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সেই বিখ্য়াত দিদি,-দিদি ডাক অনেকেরই নজর কেড়েছিল।
এবার রাজ্যের এক বিজেপি বিধায়কের দিদি ডাককে কেন্দ্র করে তোলপাড় পরিস্থিতি। এবার ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্য়ায় বাংলার মুখ্য়মন্ত্রীকে বার বার দিদি ডেকেছেন। ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে তিনি বলছিলেন বিধানসভায়। সেই সময় তিনি বার বার দিদি বলে ডাক দেন। এর জেরে অস্বস্তিতে বাড়তে থাকে রাজ্য বিজেপির অন্দরে। এমনকী বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে আমাদের দিদি বলে উল্লেখ করেছিলেন শিখা। আর শিখার এই দিদি ডাকে হতচকিত তৃণমূল-বিজেপি উভয় পক্ষই।
শিখা চট্টোপাধ্য়ায়। দীর্ঘদিন তিনি তৃণমূলের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন। ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি এলাকায় তৃণমূলের একসময়ে যে কয়েকজন লড়াকু নেতা নেত্রী ছিলেন তার অন্য়তম ছিলেন শিখা। এমনকী শিখা একটা সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়েরও গুডবুকে ছিলেন। তবে সেসব অতীত। আর দিদি ডাক শুনে সেই অতীতকেই মনে করালেন খোদ মমতা।
শিখা বলেছিলেন, দিদি আপনাকে কাছে পেয়েছি। তাই জিজ্ঞাসা করছি, বেলুড় মঠের সম্পত্তি যদি দখল হয় তখন কীভাবে তার সমাধান হবে? কীভাবে সম্পত্তি দখলমুক্ত হবে?
তবে মুখ্য়মন্ত্রী অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে শিখা চট্টোপাধ্য়ায়ের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। মুখ্য়মন্ত্রী শিখা চট্টোপাধ্য়ায়কে মনে করিয়ে দেন, আপনার রাজনীতির হাতেখড়ি আমাদের হাতেই হয়েছিল।
মুখ্য়মন্ত্রী তাঁর জবাবে বলেন, আসলে এসব ক্ষেত্রে একটা নিয়ম আছে। অভিযোগ এলে সেসব ট্রাইবুনালে যায়। সেখান থেকে মামলা দরকার হলে হাইকোর্টে যাবে। পরে প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টে যায়। মুশকিল হল, আমরা এই নিয়ম অনেকে জানি না। বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
এদিকে শিখা মুখ্যমন্ত্রীকে দিদি বলে সম্বোধন করার জেরে বিজেপির অন্দরে নানা প্রশ্ন উঠছে। আবার তৃণমূলের একাংশের মতে, বাংলার মুখ্য়মন্ত্রীর উপর আনুগত্যের একটা মাধ্যম হল এই দিদি।
এর আগে ২০২৪ সালে শিলিগুড়ির জাবরাভিটায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেছিলেন, ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়়ির তৃণমূল প্রার্থী গৌতম দেবের প্রচারে এসে দেখেছিলাম মাঠ উপচানো ভিড়। কিন্তু পরে দেখলাম গৌতম দেব হেরে গেল। আর যাকে আপনারা জেতালেন তার সম্পর্কে বিজেপির মতো কুরুচিকর মন্তব্য করতে চাই না। কিন্তু জেনে রাখবেন তাকে রাস্তা থেকে তুলে এনে গ্রাম পঞ্চায়েত বা সমিতির মেম্বার আমিই বানিয়েছি। আর তার কত ফুটানি। ডাবগ্রামের কথা তার মনে থাকে না! কী করেছে জিজ্ঞাসা করুন তাকে।